মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
অনেকদিন হলো, আর চিঠি লেখা হয় না।
এক সময় ছিল—আত্মীয়, স্বজন, বন্ধুদের কাছে চিঠি লিখতাম, জানতে চাইতাম, “কেমন আছো?” “কি খবর?”
সেই চিঠি লেখার অভ্যাসটাই যেন ভুলে গেছি।
আজকের এই আধুনিক, ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতায় সবকিছুই হাতের মুঠোয়। ফোন করলেই মূহূর্তেই জানা যায় কার কী খবর।
বিজ্ঞানের এক অসাধারণ আবিষ্কার—মোবাইল ফোন।
তবে এই আবিষ্কার আমাদের চিঠিকে ধীরে ধীরে মুছে দিয়েছে জীবন থেকে।
চিঠি এখন শুধুই সীমিত কিছু অফিস-আদালতের কাগজপত্র, সরকারি নোটিশে সীমাবদ্ধ।
ছোট ছোট বাচ্চারা জানেই না চিঠি আসলে কী জিনিস।
ওরা জানে, “খবর নিতে হলে ফোন করো, মেসেজ পাঠাও।”
চিঠি কীভাবে লেখা হয়, কোথা থেকে খাম কিনতে হয়, খামের মুখে আঠা লাগাতে হয়, আর সেই চিঠি কোথায় ফেলা হয়—এসবই তাদের অজানা।
ডাক পিয়নের সেই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দটা—*“আপনার চিঠি এসেছে”—*স্মৃতি হয়ে গেছে।
চিঠি আসে না। কেউ আর লিখেও না।
একটা চিঠি মানে শুধু খবর না,
ওতে লুকিয়ে থাকতো—হাসি, কান্না, আনন্দ, বেদনা, আশা-ভালোবাসা।
চিঠি পাওয়ার পর যে আবেগ, সেই অস্থির অপেক্ষা, সেই অনুভব—
সেটা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে আসে না।
রাস্তার পাশে সেই লাল রঙের ডাকবাক্স, যেটাতে কখনো চিঠি ফেলতাম,
আজ মরিচা পড়ে গেছে। কেউ রং করে না। তালা নেই।
কারণ, চিঠি আর কেউ লেখে না।
চিঠি লিখতাম এক সময়। এখন আমিও লিখি না।
চিঠি লেখা যেন কোনো এক হারিয়ে যাওয়া কবিতার মতো—
যার শব্দগুলো এখন শুধু স্মৃতিতে বেঁচে আছে।
তবুও মন মাঝে মাঝে চায়—
আরেকবার যদি কেউ লিখে,
“কেমন আছো?”
আমি কি উত্তর দেব না?