মোঃ মামুন মোল্লা, খুলনা :
খুলনার যোগিপোল এলাকার দরিদ্র দিনমজুর মো. সামছুল আলম (৫৩) পরকীয়ায় আসক্ত সাবেক স্ত্রী নাসিমা আক্তার (৪৭)-এর দায়ের করা একের পর এক মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে এখন নিঃস্ব। তালাকের সাত বছর পরও গুম, মারপিট, ছিনতাই ও হাস্যকরভাবে দ্বিতীয় বিয়ের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে ৮টি মামলা, যার মধ্যে ৬টি মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে তিনি আদালতে খালাস পেয়েছেন।
Currently সিআর ৭৮/২৪ and পারিবারিক আপিল ৫৫/২৩ নামে দুটি মামলা চলমান রয়েছে।
সংসার ভাঙার নেপথ্য কাহিনি
১৯৯৬ সালে পিরোজপুরের কাউখালির নাসিমা আক্তার এর সঙ্গে বিয়ে হয় সামছুল আলমের। সংসারে একমাত্র কন্যাসন্তান সুমনা (২১) থাকলেও নাসিমার আচরণে ধীরে ধীরে অশান্তি বাড়তে থাকে। একাধিক পরকীয়ার অভিযোগ, পারিবারিক নির্যাতন এবং নিজের আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে শেষমেশ ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর মোহরানার টাকা বুঝে নিয়ে নাসিমা জোরপূর্বক তালাক দেন।
এরপর নাসিমা আক্তার সুবিধাভোগী একটি মহলের প্ররোচনায় পুরনো স্বামীকে সায়েস্তা করতে একাধিক জাল ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিস্ময়কর ধারাবাহিকতা
নাসিমার দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- ভুয়া দ্বিতীয় বিবাহ মামলা
- গুম, মারপিট ও ছিনতাই মামলা
- সিআর ৭৮/২৪: যেখানে সামছুল আলম ছাড়াও তার ৪ আত্মীয়কেও আসামি করা হয়
- সি আর ৯৯/২৩: যে মামলায় ১০ হাজার টাকায় আদালতের মাধ্যমে মিমাংসা হয় এবং বাদী লিখিতভাবে জানান, আর কোনো মামলা করবেন না
তবে তাজ্জব ব্যাপার হলো, খালাসের পরও পূর্বের মামলার অনুরূপ ধারায় নতুন মামলা দায়ের করেন নাসিমা আক্তার, যা আইনের অপব্যবহারের উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সাক্ষীদের বক্তব্য
মামলার প্রধান স্বাক্ষী মেহেদী হাসান বলেন:
“আমি ২০ বছর ধরে ঢাকায় চাকরি করি। খুলনায় যাইনি। আমাকে না জানিয়ে স্বাক্ষী করা হয়েছে। নাসিমা সম্ভবত মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।”
অন্য স্বাক্ষী শাহ আলম সরাসরি কিছু বলতে রাজি না হলেও সাক্ষ্য দেওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
আইনি অবস্থান
সামছুল আলমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম মাসুদুর রহমান Said,
“একাধিক মামলা খালাস পাওয়ার পরও একই ধরনের নতুন মামলা সম্পূর্ণ হয়রানিমূলক। পূর্বের মামলার নিষ্পত্তির দলিল আদালতে জমা দিলে আশা করি ন্যায়বিচার মিলবে।”
He also said,
“একটি মামলায় বাদী নিজেই লিখিতভাবে জানিয়েছেন, আর কোনো মামলা করবেন না। তা সত্ত্বেও নতুন মামলা করা হলে তা আদালতে অগ্রাহ্য হওয়ার কথা।”
বাদীর প্রতিক্রিয়া
মামলার বাদী নাসিমা আক্তার সাংবাদিকদের প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট জবাব না দিয়ে বলেন,
“বারবার অপরাধ করে তাই বারবার মামলা করি। সাংবাদিকদের বললে কিছু হবে না, আমি তাকে শায়েস্তা করেই ছাড়বো।”
অসহায় দিনমজুরের আকুতি
ভুক্তভোগী সামছুল আলম Said,
“আমি দিনমজুর মানুষ। প্রতিদিন আদালতে দৌড়াদৌড়ি করে শেষ। এখন কেউ শুনছে না। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই। যারা মিথ্যা মামলা দিয়ে জীবন নষ্ট করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা চাই।”