সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় আজ সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তিন পুলিশ সদস্যসহ মোট আটজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে একই দিনে নির্ধারিত আরেকটি মামলায়—আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় কেউ আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হননি।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিচারক স্বপন কুমার সরকারের আদালতে এই দুটি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিবরিয়া হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিলেও সুরঞ্জিত হামলা মামলায় কোনো সাক্ষী হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ সময় চেয়ে আবেদন করে। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন আগামী ২৭ মে।
সিলেটের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আবুল হোসেন জানান, কিবরিয়া হত্যা মামলায় যাঁরা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন, কনস্টেবল তাওয়াবুর রহমান, নাসির উদ্দিন, লোকমান আহমদ, রিপন মিয়া, সুকুমার সরকার, অর্জুন সরকার ও ফিরোজ আলী।
এদিন মামলার জামিনে থাকা আসামিদের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে জামিনে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছসহ কারাবন্দি অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার সময় গ্রেনেড হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এই হামলায় নিহত হন তাঁর ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদাসহ আরও চারজন এবং আহত হন অন্তত ৭০ জন।
অন্যদিকে, ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জের দিরাই বাজারে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনী জনসভায় গ্রেনেড হামলা হয়, যাতে যুবলীগের এক কর্মী নিহত হন ও আরও ২৯ জন আহত হন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। ওই ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও, ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর এই মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় মোট ১২৩ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এই দুই মামলার বিচার অগ্রগতির দিক থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা ও জটিলতাকেই নতুন করে সামনে আনছে।