শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন শপে লোহার বাবরি চুরির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। চুরির অভিযোগে টেম্পোরারি লেবার রিক্রুটমেন্ট (টিএলআর) কর্মী মো. জাবেদকে (৩৫) আটক করেছে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী (এনআরবি)।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় রেলওয়ের কর্মচারী, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও শহরের লোহা ব্যবসায়ীসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আটক জাবেদ সৈয়দপুর পৌর এলাকার পাটোয়ারী পাড়ার বাসিন্দা মমিতুল ইসলামের ছেলে।
■ ঘটনার সূত্রপাত
গত সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে কারখানার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন শপে চুরির বিষয়ে গোপন সূত্রে খবর পান শপ ইনচার্জ সিনিয়র সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বিষয়টি রেলওয়ের বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ককে অবহিত করেন।
পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জাবেদ একটি বস্তায় করে লোহার বাবরি বহন করছেন। এরপর রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী তাকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে জাবেদ চুরির ঘটনা স্বীকার করে এবং এ কাজে জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশ করে।
■ অভিযুক্তরা
জাবেদের অভিযোগে যাঁদের নাম উঠে আসে—
- মো. হুমায়ুন কবির (৪৩), টিএলআর, বাফার সেকশন
- মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫), টিএলআর, ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন শপ
- হাসান আল মামুন (৪০), হাবিলদার, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী
- মোহন চন্দ্র, মুন্না হোসেন, জাভেদ আকতার ও এরশাদ আলী— সৈয়দপুর শহরের লোহা ব্যবসায়ী
রাতে ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন শপের ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নাম ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
■ প্রশাসনিক ব্যবস্থা
ঘটনার পর টিএলআর হুমায়ুন কবির ও সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর লালমনিরহাট কমান্ড্যান্ট মোরশেদ আলমের নির্দেশে হাবিলদার হাসান আল মামুনকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ-উন নবী জানান, “আটক মো. জাবেদকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
■ তদন্ত চলছে
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার পরিদর্শক ইলিয়াছ হোসেন বলেন, “আটক ব্যক্তি বর্তমানে আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলছে।”