মো. মাহফুজুর রহমান মাসুম, উজিরপুর (বরিশাল) প্রতিনিধি:
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের মূলপাইন গ্রামে জনতার হাতে ধরা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জীবন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অবশেষে মামলা গ্রহণ করেছে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ। গত ৪ জুলাই, এসআই মো. আসাদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
Before this “উজিরপুরে মাদকসহ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করলো জনতা – ছেড়ে দিল পুলিশ” শীর্ষক সংবাদটি বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। জনতার হাতে আটক হওয়ার পরও পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়ায় এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
আটকের ঘটনা ও বিতর্ক
৩ জুলাই রাতে মূলপাইন বাজারে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জীবন চক্রবর্তী (৫০), পিতা অনন্ত লাল চক্রবর্তী, গাঁজা ও ইয়াবাসহ জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। তবে এসআই আসাদুল ইসলাম তাকে চিকিৎসার অজুহাতে ছেড়ে দেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মাদক উদ্ধার ও আটকের পরও তাকে ছেড়ে দেওয়া পুলিশের দুর্নীতির নমুনা।
এসআই আসাদুল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, “আটককৃত ব্যক্তিকে জনতা গণধোলাই দেয়, এবং মাদক রাস্তায় পড়ে ছিল। তাই উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে।”
পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ
সংবাদ প্রকাশের পর থানা পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, কিছু সিনিয়র কর্মকর্তার কারণে থানার সুনাম ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরমভাবে অবনতি ঘটেছে।
আইনি প্রক্রিয়া ও তদন্ত
বর্তমানে মামলার তদন্ত দায়িত্বে রয়েছেন এসআই মো. আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, “আমি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি। নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Political reaction
উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. হুমায়ুন খান বলেন, “যদি কোনো রাজনৈতিক কর্মী মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকে, কিংবা মাদক ব্যবসায়ীদের রক্ষায় কাজ করে, তবে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। পুলিশ সদস্য জড়িত থাকলেও আমরা প্রতিবাদ করব।”
উপজেলা জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি খোকন সরদার বলেন, “যেসব পুলিশ কর্মকর্তা মাদক ব্যবসায়ীদের সহায়তা করছেন, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কঠোর প্রতিবাদ জানাব।”
প্রশাসনের বক্তব্য
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী সুজা বলেন, “মাদক বা আইন-শৃঙ্খলা অবনতির সঙ্গে জড়িত কোনো পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”