জামিউল ইসলাম তুরান, শান্তিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ::
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রাইজুল (৭৪) পুলিশের তত্বাবধানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাকে ‘ডেবিলহান্ট’ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
পরে কারাগারে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তিনি। অসুস্থ্য অবস্থায় সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশি তত্বাবধানে নিয়ে গেলে, সেখানেই তার মৃত্যু ঘটে। রিয়াজুল ইসলামের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন তাঁর ভাতিজা আবু বক্কর ও ইউপি সদস্য জুবায়েল আহমদ। তারা জানান, বুধবার রাত ১০টা ২০ মিনিটের সময় হাসপাতালে মারা যান তিনি। এর আগেরদিন মাথায় রক্ত জমাট বাঁধায় অস্ত্রোপচার হয় তার। পরদিন তিনি মারা যান। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে সিলেটের কতোয়ালি পুলিশ হস্তান্তর করবে বলে জানা গেছে।
এই ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি, হৃদরোগে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। আগামীকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বীরগাঁও গ্রামের মাঠে জানাজা শেষে পারিবরিক কবরস্তানে দাফন হবে মরহুম রিয়াজুল ইসলামের।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের তত্বাবধায়ক মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া, কারাধ্যক্ষ আবু সালাম তালুকদারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেন নি। শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরাম আলী জানান, থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা একটি মামলার আসামি হিসেবে গেল ৩০ মার্চ রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসঙ্গত, রিয়াজুল ইসলাম দীর্ঘদিন বেলজিয়াম ছিলেন। গেল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে দেশে এসে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন তিনি। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাঁর তিন ছেলে ও দুই মেয়ের সবাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী।
ভাতিজা আবু বক্কর গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, তাঁর চাচার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। কারও সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধও ছিল না। তিনি বাড়িতেই থাকতেন। ঈদের আগের দিন ইফতারের আগে তাঁকে বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তখনো তিনি (রিয়াজুল) অসুস্থ্য ছিলেন। তিনি ২২ টি ওষুধ সেবন করেন। এর মধ্যে ১৯টি ঔষধ সব সময় চলবে। পুলিশকে সব দেখিয়েছেন। পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠানের কাগজেও (চালান) তাঁর এসব অসুস্থ্যতার কথা উল্লেখ করেছে।
আবুবক্কর জানান, গেল চার এপ্রিল তাঁরা জানতে পারেন, কারাগারে তিনি গুরুতর অসুস্থ্য, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ঈদের পরদিন ঘটনা হলেও কারাগার থেকে জানানো হয়েছে তিনদিন পর।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আবুবক্কর বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমরা বারবার বলেছি, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা, আমাদের সব সামর্থ্য আছে। কিন্তু আমাদের কথা কেউ শোনেনি।’