Joypurhat Correspondent :
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের কুসুমসাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাল সনদ ব্যবহার করে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। জয়পুরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কালাই থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা ও অভিযুক্ত
গত ১৯ জুন মামলাটি করেন প্রত্যাশী প্রার্থী শামীম হোসেন। অভিযুক্ত মেহেদুল ইসলাম (২৫), কুসুমসাড়া গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন সরকারের ছেলে।
কী রয়েছে মামলায়?
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফাজ উদ্দীন কুসুমসাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। আবেদনকারীদের অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদপত্র দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, অন্যরা বৈধ সনদ জমা দিলেও অভিযুক্ত মেহেদুল ইসলাম রাঘবপুর চৌমুহনী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে জাল সনদ দাখিল করেন।
তদন্তে উঠে আসে, তিনি কখনো ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান লিখিতভাবে জানান, মেহেদুল ইসলাম নামে কোনো শিক্ষার্থী কখনো পড়েনি এবং ওই নামে কোনো সনদ ইস্যু হয়নি। সনদে ব্যবহৃত স্বাক্ষর ও সীলও জাল।
ঘুষের অভিযোগ
এজাহারে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বীকার করেছেন তিনি আট লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে নিয়োগ বোর্ডের কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চাকরি পেয়েছেন।
রাজনৈতিক অভিযোগ
মামলার প্রেক্ষিতে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন,
“১৭ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দুর্নীতির বলি হচ্ছে প্রকৃত যোগ্যরা। ঘুষ আর ভুয়া সনদের মাধ্যমে নিয়োগ হচ্ছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।”
অভিযুক্তের বক্তব্য
অভিযুক্ত মেহেদুল ইসলাম বলেন,
“আমার বাবা হত্যামামলার আসামি হওয়ায় আমাকে হেনস্তা করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের স্যারও চাপে পড়ে আমাকে অস্বীকার করছেন। এখানে রাজনৈতিক খেলা চলছে।”
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতামত
বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী জানান,
“সঠিক প্রক্রিয়াতেই নিয়োগ বোর্ড গঠিত হয় এবং পরীক্ষার মাধ্যমে মেহেদুল চাকরি পান। তবে সনদপত্রটি ঘিরে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে সবকিছু পরিষ্কার হবে।”
রাঘবপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান,
“ওই ব্যক্তি আমাদের ছাত্র ছিল না। সনদ জাল। লিখিতভাবে জানিয়েছি।”
থানার অবস্থান
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন,
“আদালতের নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।”