মনির হোসেন, বেনাপোল:
বেনাপোল স্থলবন্দরে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে আনা প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের আমদানি নিষিদ্ধ ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্য চালান আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)-এর তথ্যের ভিত্তিতে বেনাপোল বন্দরের ২৬ নম্বর শেড থেকে পণ্যগুলো জব্দ করা হয়।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আটককৃত চালানে ছিল আমদানি নিষিদ্ধ ৬০ কেজি ওষুধ, ৯৬ হাজার পিস জিলেট ব্লেড, ৬০ পিস শাড়ি কাপড়, ২২০০ পিস মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে এবং এক কেজি ওজনের একটি সাদা রঙের গুড়া পাউডার। তবে পাউডারটির প্রকৃতি এখনো নির্ধারণ হয়নি। এটি পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে কাস্টমস।
চালানটি জব্দের সময় উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার মির্জা রাফেজা এবং বন্দর সহকারী পরিচালক আজহারুল ইসলাম। অভিযানে আটক পণ্যের কোনো বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, আটক পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স দলিলুর রহমান অ্যান্ড সন্স’ এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ‘সার্ভিস লাইন’, বেনাপোল, যশোর। আমদানিকারক বাবলুর রহমান ও ২৬ নম্বর শেড ইনচার্জ তরিকুল ইসলামের যোগসাজশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই অবৈধ আমদানি সম্পন্ন হয়।
বন্দর সূত্রে আরও জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বৈধ পণ্যের আড়ালে নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি ও পাচার হয়ে আসছে। এসব পণ্য গোপনে শেডে সংরক্ষণ করা হতো এবং পরে বৈধ পণ্যের সঙ্গে মিশিয়ে ট্রাকে লোড করে গন্তব্যে পাঠানো হতো। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দেশে বাড়ছে নিষিদ্ধ ওষুধ ও মাদকের প্রবাহ।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের জয়েন্ট কমিশনার মির্জা রাফেজা জানান, “আমদানি নিষিদ্ধ এই চালানটি আটক করা হয়েছে। অফিস খোলার পর কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বেনাপোল বন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শুল্ক ফাঁকি ও নিষিদ্ধ পণ্যের পাচার অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।