যশোর প্রতিনিধি:
যশোরের শার্শায় ৬২ ক্যারেট অপরিপক্ক গোবিন্দভোগ আম জব্দ, কিন্তু নাটকীয়তার পর গভীর রাতে বিশেষ সুবিধায় ছেড়ে দিল পুলিশ, স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি।
উপজেলার বেলতলা আম বাজারে গত ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার একটি আলমসাধু আটক করা হয়, যা ছিল অপরিপক্ক ৬২ ক্যারেট গোবিন্দভোগ আমে পূর্ণ। স্থানীয় জনতা প্রথমে এ আমের ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করে, যার পর পুলিশ আম ও আলমসাধু জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। একই সঙ্গে আটক করা হয় আলমসাধুর ড্রাইভার ও একজন অসাধু আম ব্যবসায়ীকে।
তবে দিনভর চলা এই ঘটনাটি গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন নাটকীয় মোড় নেয়। অভিযোগ উঠেছে যে, শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বিশেষ সুবিধার মাধ্যমে জব্দকৃত আম, আলমসাধু, ড্রাইভার এবং ব্যবসায়ীকে রাতের গভীরে ছেড়ে দিয়েছেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় জনতার মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, আসামিদের ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অংকের অর্থ নেওয়া হয়েছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই তাকে দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তা আখ্যায়িত করে অবিলম্বে তার বদলির দাবি জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম বলেন, “জব্দকৃত আম, আলমসাধু, ড্রাইভার এবং ব্যবসায়ীকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতিক্রমে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা জানান, “ওসি আম জব্দের বিষয়ে আমাকে জানিয়েছিল, কিন্তু পরে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা তা জানানো হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “এখনো গোবিন্দভোগ আম পাকার সময় হয়নি, তবে যদি কোনো গাছের আম অগ্রিম পাকেও, তখন ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে আম পাড়া যাবে।”
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. কাজী নাজিব হাসান জানান, তিনি ওসিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছিলেন, তবে তা নেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ অপরিপক্ক আম কার্বাইড বা অন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে পাকিয়ে বাজারে নিয়ে আসে, তবে তার বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৫২ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা ও সচেতন মহলের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।