Shahjahan Ali Manon, Saidpur (Nilphamari) Representative:
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম কর্তৃক ঈদগাহ এর জমি থেকে বিশালাকৃতির ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে আত্মসাৎ করার অভিযোগ মিলেছে।
সম্পূর্ণ গায়ের জোরে এবং ঈদগাহ কমিটির অগোচরে এই কাজ করা হয়েছে বলে সৈয়দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ঈদগাহ কমিটির সভাপতি মো. আশরাফুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ওই ইউনিয়নের লক্ষণপুর চরকপাড়া ডাঙ্গারহাট এলাকায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার মৃত ডাইরকা মামুদের ছেলে, ওয়ার্ড মেম্বার ও ঈদগাহ কমিটির সেক্রেটারী আব্দুস সালাম, তার ভাই গোলাম মোস্তফা এবং সহযোগী একই এলাকার মৃত সাহার উদ্দিনের ছেলে ইলিয়াস আলী ও মৃত আব্দুল গফুর সরকারের ছেলে আইয়ুব আলী শুক্রবার সকাল ৯ টায় ঈদগাহ কমিটির সদস্যদেরকে না জানিয়ে, সকলের অগোচরে ঈদগাহ থেকে ২টি বিশালাকৃতির ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে নিয়ে গেছে। গাছ দুটির দাম আনুমানিক প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
কমিটির লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এই অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় আব্দুস সালাম গংরা গালিগালাজ করাসহ তাদের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে বলে এব্যাপারে বাড়াবাড়ি করলে ভালো হবেনা। নানা ভয়ভীতি দেখায়, এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেয়।
ঈদগাহ কমিটির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুস সালাম সম্পূর্ণ গায়ের জোরেই একাজ করেছেন। ইতোপূর্বেও তারা এভাবে ঈদগাহের গাছ কেটে সাবার করেছে। আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় তারা আগে এমন অবৈধ কাজ প্রায়ই করলেও কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারতো না। কিন্তু পট পরিবর্তনের পরও তার এমন অন্যায় কাজ মেনে নেয়া যায়না।
তিনি বলেন, ঈদগাহ মূলতঃ এলাকার সর্বস্তরের মানুষের। তাছাড়া এটি ওয়াকফ্কৃত জমি। সেখান থেকে এভাবে গাছ কেটে নেয়া গ্রহণযোগ্য নয়। আর প্রয়োজন হলে তা কমিটির মাধ্যমে রেজুলেশন করে এলাকাবাসীর সম্মতিতে করতে হবে। কিন্তু আব্দুস সালাম ও তার পরিবার এখনও ইচ্ছেমত কারবার করে চলেছেন। এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।
এলাকার অনেকে বলেন, মসজিদ ও ঈদগাহের জন্য মেম্বার আব্দুস সালাম কখনই কোন সরকারী বরাদ্দের ব্যবস্থা করেননি। অথচ তিনি চাইলেই টিআরসহ বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ নিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে ঈদগাহের গাছ কেটেছেন। আর মসজিদের কথা বলে গাছ কাটা হলেও তারা মূলতঃ ব্যক্তিগত কাজে এগুলো ব্যবহার করছেন। এর আগেও এভাবে ঈদগাহের গাছ কেটে সাবার করা হয়েছে।
এব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুস সালামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঈদগাহ ও মসজিদ আমাদের পৈত্রিক জমিতে। যা আমার পূর্ব পুরুষরা ওয়াক্ফ করে গেছেন। একারনে আমরাই এর মোতাওয়াল্লীর দায়িত্ব পালন করে আসছি। এর আগেও এভাবে প্রয়োজন হওয়ায় গাছ কেটে মসজিদ ও ঈদগাহের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এবারও মূলতঃ মসজিদের বারান্দার চাল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চালের ফ্রেম করার জন্য গাছ কাটা হয়েছে। এক্ষেত্রে কমিটির সম্মতি লাগবে কেন? একটি বৈধ কমিটি থাকা সত্বেও তা উপেক্ষা করে এককভাবে এমন কাজ করা কি ঠিক হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাইকে মৌখিকভাবে জানিয়েই করা হয়েছে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু বিষয়টি যেহেতু মসজিদ ও ঈদগাহ সংক্রান্ত এবং ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ। তাই বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেখবেন। সেকারণে অভিযোগকারীদের ইউএনও মহোদয়ের কাছে যেতে বলেছি।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জানিনা। এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।