সউদ আব্দুল্লাহ
Kalai (Joypurhat) Representative:
জয়পুরহাটের কালাইয়ে ফেরদাউস হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষী ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুরনবী মন্ডলের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।অভিযোগ উঠেছে স্বাক্ষী হওয়ায় এবং চাঁদার ১০ লাখ টাকা না দেওয়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়।হামলায় নুরনবীর হাত ও পা ভেঙে চুরমার করে তাঁকে একটি পুকুরে ফেলে দিয়ে যায় হামলাকারীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৫ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে,কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের ম্যাড়েরপুকুর এলাকায়। গুরুতর আহত অবস্থায় নুরনবী মন্ডলকে প্রথমে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাত ৯ টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।আহত নুরনবী মন্ডল বিয়ালা গ্রামের ওসমান গনি মন্ডলের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সাধারণ সদস্য।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২০ সালের নভেম্বরে বিয়ালা এলাকার ধুনট পুকুরে হোপ গ্রামের যুবক ফেরদাউসকে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় কালাই থানায় মামলা হলে প্রধান আসামী হন ইয়াকুব আলীর ছোট ভাই রেজাউল ইসলাম। মামলায় স্বাক্ষী হন ইউপি সদস্য নুরনবী মন্ডল।
পরিবারের অভিযোগ, মামলার পর থেকেই তাঁকে স্বাক্ষ্য থেকে বিরত রাখতে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।গত ৫ আগস্টের পর থেকে ইয়াকুব আলী সরাসরি ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে পরিণতি ভয়াবহ হবে এমন হুমকিও দেওয়া হয়।
আজ বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের কাজ শেষে মোটরসাইকেলে বিয়ালা বাজারে যাচ্ছিলেন নুরনবী।পথে ম্যাড়েরপুকুরে পৌঁছালে রেজাউল ইসলাম,যুবদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক,বিএনপি কর্মী তাজমহল,রেজাউল করিম,জনাব আলী, আব্দুল করিমসহ প্রায় ১৫-২০ জন সশস্ত্র দলবল নিয়ে তার গতিরোধ করে।এরপর তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয় এবং টেনে হিঁচড়ে পাশের পুকুরে ফেলে রেখে চলে যায়।
আহত নূরনবীর স্ত্রী রোজিনা বেগম বলেন, ফেরদাউস হত্যা মামলার স্বাক্ষী হওয়ার কারণে ৫ আগষ্টের পর ইয়াকুব আলী আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।এরপর সে দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।টাকা না দেওয়ায় আজ আমার স্বামীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। আমরা এর ন্যায়বিচার চাই। তিনি আরও বলেন,ইয়াকুব আলী একজন কুখ্যাত ব্যক্তি। কিছুদিন আগেও সে বিয়ালাসহ আশপাশের গ্রামে লুটপাট ও ভাঙচুর চালিয়েছে।
অভিযুক্ত ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইয়াকুব আলী বলেন,নুরনবীকে মারধরের বিষয়ে শুনেছি, তবে কে বা কারা করেছে তা আমার জানা নেই।তবে সে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলার স্বাক্ষী।
কালাই থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) এস এম কামাল হোসাইন বলেন, ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।