দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বিয়ের মাত্র তিন দিন পর নববধূ তানিয়া আক্তারকে (১৮) হত্যার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে, স্বামী আব্দুর রহিম তানিয়াকে গলা টিপে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনায় রহিমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
- ঘটনাস্থল: দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ হযরতপুর গ্রাম।
- ঘটনার সময়: রবিবার (৯ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে।
- নিহত: তানিয়া আক্তার (১৮), পার্বতীপুরের কুড়িয়াইল গ্রামের আবু তালেবের মেয়ে।
- আটক: আব্দুর রহিম, তানিয়ার স্বামী ও দক্ষিণ হযরতপুর গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে তানিয়া আক্তার ও আব্দুর রহিমের বিয়ে হয়। শনিবার (৮ মার্চ) তানিয়া তার বাবার বাড়ি যান এবং রবিবার রহিমের স্বজনরা তাকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসেন। রাত ২টা থেকে ৩টার দিকে রহিম তানিয়াকে গলা টিপে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ ওঠে।
প্রতিবেশীরা রহিমকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তানিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে এবং রহিমকে গ্রেপ্তার করে।
নিহত তানিয়ার মা মনজিলা বেগম অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “বিয়ের মাত্র তিন দিন পর আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।”
চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওদুদ বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে রাগের বশে স্বামী তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। আমরা তদন্ত করছি।”
তদন্ত কর্মকর্তা এস এম আহসান হাবীব জানান, নিহতের মরদেহ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিম হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তানিয়ার বাবা আবু তালেব থানায় হত্যার মামলা দায়ের করেছেন।
এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা ছড়িয়েছে। অনেকেই এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এই ঘটনা আমাদের সমাজে নারী নির্যাতন ও সহিংসতার একটি মর্মান্তিক উদাহরণ। নববধূর হত্যাকাণ্ডে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তানিয়া আক্তারের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আশা করি, দোষী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।