বরিশাল নগরীতে চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মো. সুজন (২৫) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার একটি ভিডিও পুলিশ উদ্ধার করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, একদল যুবক তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে মারধর করছে। তবে পুলিশ এখনো কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
নৃশংস নির্যাতনের ভিডিও
ভিডিওতে দেখা যায়, সুজনকে নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কীর্তনখোলা নদীর জিয়ানগর মাঠে একটি গাছের সঙ্গে উঁচু করে বেঁধে কয়েকজন যুবক লাঠি দিয়ে আঘাত করছে। এক পর্যায়ে গুরুতর আহত হলে তাকে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। সুজন পানি চাইলে একজন তাকে গ্লাসে পানি এনে দেয়, কিন্তু তাতেও তার ওপর নির্যাতন থামেনি।
পরিবারের অভিযোগ: পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড
সুজনের পরিবার শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তার ভাই মো. আকাশ জানান, সুজন মাদকাসক্ত ছিলেন এবং একটি মাদক ব্যবসায়ী চক্রের হয়ে ইয়াবা বিক্রি করতেন। সম্প্রতি তিনি এ কাজ থেকে সরে আসতে চেয়েছিলেন, যা ওই চক্র মেনে নিতে পারেনি।
সুজনের মা মঞ্জু বেগম অভিযোগ করেন, ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগটি সাজানো ছিল এবং তাকে ফাঁসিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার আগের দিন স্থানীয় একজন ২০ হাজার টাকা চেয়ে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে তিনি দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সুজনকে প্রথমে ধরে নিয়ে যায় কয়েকজন যুবক। এরপর জিয়ানগর মাঠে নিয়ে গিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। এতে অংশ নেয় স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ীর ছেলে মো. বাঁধন, কাইয়ুম মুনশি, ইমনসহ ছয়-সাতজন যুবক। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ সুজনকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
Police location
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, ‘সুজনকে গাছে বেঁধে মারধরের ভিডিও আমাদের হাতে এসেছে। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়েছে, তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর তদন্ত আরও গতি পাবে।’
এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অপরাধী যে-ই হোক, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।