মনির হোসেন, বেনাপোল:
ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ছাতা কারিগরদের কদর বেড়েছে। সেই সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়েছে তাদের। এ বছর আষাঢ় মাসের শুরু থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। একটানা বৃষ্টি হওয়াতে ছাতার ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ঘরে পড়ে থাকা নষ্ট ছাতা ব্যবহার উপযোগি করতে অনেকেই ছুটছেন কারিগরের কাছে।
সারা বছর তেমন একটা কাজ থাকে না ছাতা কারিগরদের। তবে বর্ষা যেন তাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কারণ, বর্ষা এলেই কদর বাড়ে তাদের। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে বেনাপোল সহ শার্শা উপজেলায় ছাতা কারিগররাও ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সারা বছর উপজেলার ও বেনাপোল পৌরসভা বাজারে ছাতা মেরামতের কাজ করে কারিগররা, তবে বর্ষাকালে উপজেলার বেনাপোল,বাহাদুরপুর,শার্শা, নাভারণ, বাগআঁচড়া,ডিহি, লক্ষণপুর, পুটখালী, গোগা, বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বসে মৌসুমী কারিগররা ছাতা মেরামত করছে। এসব স্থানে নষ্ট ছাতা মেরামত কর লোকজনের ভিড় করছে। কারিগরদের ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে। তারা নাওয়া-খাওয়া ভুলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একটানা কাজ করে যাচ্ছেন।
পৌরসভা বাজার অগ্রণী ব্যাংকের নিচে ফুটপাতে ছাতা মেরামতে ব্যস্ত ছিলেন মোঃ হোসেন আলী। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি ছাতা মেরামতের কাজের সঙ্গে যুক্ত। কামাল শেখ বলেন, বৃস্টি হলে কাজও বেশী হয়। বৃষ্টির দিনে ছাতা মেরামতের কাজ একটু বেশি হয়। এসময় তিন থেকে পাচ শত টাকা রোজগার হয়। টানা বৃস্টির দিনগুলিতে ১৫ শত টাকা থেকে দুই হাজার টাকার কাজ করেছি। তবে অন্য সময় তেমন একটা কাজ থাকে না। ছাতা মেরামতের সামগ্রীর দাম বেড়েছে আর মুজুরিও বেশি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ ছাতা মেরামত করতে আসা জনসাধারণের।
বেনাপোল পৌর ৬নং ওয়ার্ডের ভবার বের গ্রামের বাসিন্দা মো,আতিয়ার রহমান বলেন, ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। এখন বৃষ্টির সময়। বাতাসে ছাতার শিক ভেঙ্গে গেছে, তাই স্কুল ও প্রাইভেট পড়তে গেলে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। ছেলেমেয়েদের জন্য ছাতা দুইটা মেরামত করতে এসেছি।
উপজেলা নাভারণ বাজারের কারিগর গনেশ দাশ বলেন, ছাতার কারিগরদের দুর্দিন চলছে। তাই অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশাই গেছে।আবার অনেকে পূর্বপুরুষের এ পেশা ছাড়তেও পারেনি। পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এ পেশায় কেউ আসতে চায় না। তাই দিন দিন এই পেশার কারিগররা হারিয়ে যাচ্ছে।