Satyajit Das (Moulvibazar Correspondent):
মৌলভীবাজারের শেরপুর ঈদগাহ রোডের একটি আবাসিক এলাকায় ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়,গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে শেরপুর ঈদগাহ রোডের বাসিন্দা এমদাদ মোহাম্মদ সিরাজের বাড়িতে একদল দুস্কৃতিকারী হামলা চালায়। তারা গেটের তালা কেটে এবং দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে বাসার লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ২৩ ভরি স্বর্ণালংকার (মূল্য প্রায় ২৩ লাখ টাকা) এবং ৬ লাখ ৯ হাজার টাকা লুটে নেয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় মামলা (নং-০৮,তারিখ-০৬/০২/ ২০২৫, ধারা ৪৫৭/৩৯২ পেনাল কোড) রুজু হয়। পরে পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন (পিপিএম-সেবা) এর নির্দেশনায় একটি বিশেষ টিম গঠন করে অভিযান চালানো হয়।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, সিলেটের ওসমানীনগর এবং সিলেট মহানগরের দক্ষিণ সুরমা এলাকা থেকে প্রথমে মোঃ রায়হান মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে আরও দুই ডাকাত আক্কুল মিয়া ও আফাজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় রায়হানের বাড়ি থেকে ছয় রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আসামি মনর মিয়ার বাড়ি থেকে দুটি দেশীয় পাইপগান,হাইড্রোলিক কাটার, সাবল ও মুখোশ উদ্ধার করা হয়। সিলেট শহরের সোবহানীঘাট এলাকা থেকে ধরা পড়ে আরেক আসামি অশোক কুমার দে (৪০)। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের প্রধান তোফায়েল আহমদ তোফাকেও (৩৬) শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া, সিলেটের লালদিঘীরপাড় এলাকা থেকে স্বর্ণালংকার বিক্রেতা দিনেশ কর্মকার (৬৫) কে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার জুয়েলারি দোকান থেকে বাদীর লুণ্ঠিত ৪ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালংকার ও ৮ লাখ ৬ হাজার ৯৮২ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে আরও স্বীকার করেছে যে,তারা সম্প্রতি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাগারাই গ্রামে আরেকটি ডাকাতি সংঘটিত করেছিল, যেখানে প্রবাসী আব্দুর রহিমের বাড়িতে ঢুকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে।
মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ জানিয়েছে, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জেলা পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
গতকাল সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, পিপিএম। এ সময় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন এবং সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিনহাজ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।