আব্দুল লতিফ মৃধা, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী–কালীগঞ্জ) আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চারবারের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। শত শত নেতাকর্মী তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানালেও দলের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলায় নিজ বাসভবনে জাহাঙ্গীর আলমকে ঘিরে ধরেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর আপনারা আমার সঙ্গে ছিলেন। আমি যখন যা নির্দেশ দিয়েছি, আপনারা তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। আজ আপনাদের ধৈর্য ধরার সময় এসেছে। আমি বিএনপির একজন কর্মী। আমাকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে বলবেন না। আমি আপনাদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাই।
তিনি আরও বলেন, আমি যদি নির্বাচন করি, তাহলে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী পরাজিত হবেন। এতে দলের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। আমি চাই না, আমার কারণে দলের কোনো ক্ষতি হোক।
লালমনিরহাট-২ আসনটি আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২ হাজার ৩৪ জন। এবারের নির্বাচনে বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীক পেয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল। জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন এই আসনের অন্যতম শক্তিশালী মনোনয়ন প্রত্যাশী।
উল্লেখ্য, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের নুরুজ্জামান আহমেদ বিজয়ী হন। এর আগে ১৯৯১, জুন ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মজিবুর রহমান এ আসনে জয়লাভ করেন।
১৯৯৬ সালের বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী সালেহ উদ্দিন আহমেদ এই আসন থেকে নির্বাচিত হন।
মনোনয়ন না পাওয়ার হতাশা থাকলেও দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের এই অবস্থান স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যেও তার সিদ্ধান্ত প্রশংসিত হয়েছে।

