দুবাই, ১৩ ফেব্রুয়ারি: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন যে, যত দ্রুত সম্ভব দেশে নির্বাচন আয়োজন করা হবে এবং এটি এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে অংশ নিয়ে সিএনএনের সাংবাদিক বেকি অ্যান্ডারসনের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা ধীরে ধীরে সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছি। ১৫টি খাতে সংস্কারের কাজ চলছে, যার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা, পুলিশ, সংবিধান ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব কমিশন প্রতিবেদন তৈরি করেছে এবং সুপারিশ দিয়েছে। এখন আমাদের মূল কাজ ঐকমত্য গঠন।”
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ
প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসছে, যাতে সবার সম্মতিতে একটি “সনদ”তৈরি করা যায়। এই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজন করা হবে।
তিনি বলেন, “যেসব সুপারিশের বিষয়ে সবাই একমত হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন করেই আমরা নির্বাচন দেব। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া হোক। যদি সম্ভব হয়, এটি এ বছরের ডিসেম্বরেই অনুষ্ঠিত হবে।”
নির্বাচন ডিসেম্বরেও হতে পারে : দুবাই সামিটে ড. ইউনূস
অবনত অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা পুনর্গঠনের অঙ্গীকার
ড. ইউনূস স্বীকার করেছেন যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও প্রশাসন কঠিন সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে।
“বাংলাদেশের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা ধীরে ধীরে সবকিছু পুনর্গঠন করছি। আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধসে পড়েছিল, ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে, রিজার্ভ তলানিতে চলে গেছে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা, দ্বিতীয়ত আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল করা এবং তৃতীয়ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনা।”
নির্বাচনের পর নেতৃত্বে থাকার সম্ভাবনা নেই
ড. ইউনূস আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব শেষে তিনি কোনোভাবেই ক্ষমতায় থাকতে চান না।
“আমি আগেও বলেছি, নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পর আমি যে কাজে ছিলাম, সেখানে ফিরে যাব। সেটাই আমার ভালো লাগে, সেটাই আমি করতে চাই।”
বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম ও সম্ভাব্য নির্বাচনের তারিখ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা চলছে। আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি ও চূড়ান্ত নির্বাচনী রূপরেখা দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।