শাওন বেপারী, শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-১ (পালং–জাজিরা) আসন থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন দলটির সংগ্রামী আমীর পীর সাহেব চরমোনাই মনোনীত প্রার্থী মুফতি তোফায়েল আহমাদ কাসেমী। “মুক্তির মূলমন্ত্র ইসলামী শাসনতন্ত্র” স্লোগান নিয়ে তিনি হাতপাখা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) উপজেলার ডুবিসায়বর বন্দর কাজিরহাট এলাকায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এ নির্বাচনী গণসংযোগ করেন ও ভোটারদের সাথে মতবিনিময় করেন ।
প্রচার প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রার্থী মুফতি তোফায়েল আহমাদ কাসেমী বলেছেন, “ভোট শুধু সীল মারার নাম নয়, এটি একটি পবিত্র আমানত। ভোট হলো রায় এবং সাক্ষ্য প্রদান করা।” তিনি দাবি করেন, ভোটের মাধ্যমে যে ব্যক্তিকে জনসমর্থন দেওয়া হয়, নির্বাচিত হওয়ার পর তার ভালো-মন্দ কাজের অংশ ভোটদাতার আমলনামায়ও যুক্ত হবে।
তিনি আরো বলেন, কোনো খারাপ মানুষকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচিত করলে তার অন্যায়, অবিচার, জুলুম-নির্যাতন, চুরি ও দুর্নীতির গুনাহ ভোটদাতার হিসাবেও লেখা হবে। আবার কোনো সৎ ও আদর্শবান ব্যক্তিকে নির্বাচিত করলে দেশের কল্যাণে তার প্রতিটি ভালো কাজের সওয়াব ভোটদাতার প্রতিও প্রযোজ্য হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি কুরআনের সূরা নিসার ৮৫ নম্বর আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, “কেউ কোনো ভালো কাজের সুপারিশ করলে তার অংশীদার হবে, আর কেউ খারাপ কাজের সুপারিশ করলে তাতেও তার অংশ থাকবে এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে নজর রাখেন।
এ ছাড়া ভোট প্রদানে আত্মীয়তা, দলীয় টান বা ব্যক্তিগত স্বার্থের প্রভাবকে ইসলামের দৃষ্টিতে “অন্যায়” বলে উল্লেখ করে তিনি সূরা নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মুফতি তোফায়েল আহমাদ কাসেমী দাবি করেন, ইসলামবিরোধী ও দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব দিয়ে দেশ-সমাজে স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়। তিনি বলেন,
“খুনি নেতা দ্বারা খুন বন্ধ করা যায় না, দুর্নীতিবাজ নেতা দ্বারা দুর্নীতি বন্ধ করা যায় না, জালেম দ্বারা জুলুম বন্ধ করা যায় না, আর মদখোর দ্বারা মদ বন্ধ করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, মানব রচিত সংবিধান দলীয় স্বার্থে বারবার সংশোধিত হয়; তাই দেশের সার্বিক কল্যাণে ইসলাম ও মানবতার পক্ষে কল্যাণকামী দ্বীনদার নেতৃত্ব প্রয়োজন।
শরীয়তপুর-১ আসনের জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের সজাগ ও সোচ্চার থাকতে হবে, যাতে কোনো অপশক্তি ভোটাধিকার কেড়ে নিতে না পারে। শান্তির সমাজ গড়তে হাতপাখায় ভোট দিন
তিনি আরও বলেন,প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন—দুনিয়াতে যার সাথে যার ভালোবাসা থাকবে, পরকালেও তার সাথে তার হাশর হবে। তাই কাকে সমর্থন দেবো, কাকে ভোট দেবো, তা বিবেক দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শরীয়তপুর জেলা শাখার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, ইসলামী শাসনব্যবস্থাই এ দেশের শান্তি ও ন্যায়ের একমাত্র বিকল্প ব্যবস্থা। আমাদের রাজনীতি ক্ষমতা দখল বা ব্যক্তিস্বার্থের জন্য নয়, বরং ইসলাম, দেশ ও মানবতার কল্যাণে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে। আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার সুরক্ষিত হোক এবং সৎ, ন্যায়পরায়ণ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক। আসন্ন নির্বাচনে জনগণ বিবেকের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
জাজিরা থানা সভাপতি মাওলানা বি.এম. ইমরান হোসেন বলেন, আজ দেশের সবচেয়ে বড় সংকট নৈতিক নেতৃত্বের অভাব। দলীয় স্বার্থের পরিবর্তে দেশ ও মানুষের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমাদের প্রার্থী মুফতি তোফায়েল আহমাদ কাসেমী একজন দ্বীনদার ও নীতিবান আলেম; তাঁর নেতৃত্বে এ অঞ্চলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব। তাই জনগণের সচেতন অংশগ্রহণই হতে হবে পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার।
জাজিরা থানা সেক্রেটারি মো. রুবেল শিকদার বলেন, ভোট শুধু সীল মারা নয়, এটি একটি আমানত। এ আমানতের প্রতি খেয়াল না করে যদি আমরা আত্মীয়তা, দলীয় টান বা ব্যক্তিগত সুবিধার কারণে ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচন করি, তাহলে তার দ্বারা সংঘটিত সব অন্যায়ের অংশ আমাদের ওপরও বর্তাবে—এ বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট বাণী আছে। তাই ইসলামি মূল্যবোধ ধারণ করে ভোট দিতে হবে।







