শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের অপসারণ এবং কর্মকর্তাদের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ডাকে সারাদেশে চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি। এর অংশ হিসেবে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের সকল আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) থেকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে।
বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শুল্কায়ন, পরীক্ষণ ও পণ্য লোড-আনলোড সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ৪ থেকে ৫ হাজার শ্রমিক। প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রতিদিন সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা।
৪০০ পণ্যবাহী ট্রাক আটকে আছে দু’পাশে
ভোমরা স্থলবন্দর ও ভারতীয় ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে রপ্তানি ও আমদানির অপেক্ষায় আটকে রয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ পণ্যবাহী ট্রাক। এর মধ্যে শুধুমাত্র ভোমরা বন্দরে আটকা রয়েছে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি ট্রাক।
ভোমরা বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘ফারহাদ ইন্টারন্যাশনাল’-এর স্বত্বাধিকারী ও সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম বলেন, “কাস্টমস স্টেশনের কর্মকর্তারা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করায় বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।”
চরম বিপাকে শ্রমিক ও ট্রাকচালকরা
ভোমরা বন্দরে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, শনিবার সকাল থেকে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি আসেনি। তারা বেকার অবস্থায় বসে আছেন। এক শ্রমিক বলেন, “একদিন কাজ না করলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যায়। এখন বর্ষাকাল, বাইরেও কাজ নেই। এভাবে চলতে থাকলে আমরা না খেয়ে মরব।”
ঢাকা থেকে পণ্য নিয়ে আসা কর্ণফুলী ফার্ম ও টেক্সটাইল মিলের ট্রাকচালক জয়নাল আবেদীন ও আবু মুসা জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে তারা বন্দরে আটকা পড়েছেন। ফলে পণ্য মালিকদের বাড়তি ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
ভোমরা কাস্টমস স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাসেল আহমেদ বলেন, “কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কমপ্লিট শাটডাউন চলছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”
যাত্রীসেবা খোলা থাকলেও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বিপর্যয়
যদিও জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কার্যক্রম চলমান রয়েছে, তবে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় দুই দেশের ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। সরকারও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।