বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি স্বস্তিদায়ক ইঙ্গিত। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যেখানে এক সপ্তাহ আগেও তা ছিল ২০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। গত ৬ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে ১৮৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমে গিয়েছিল ২০ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় এই রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম৬ পদ্ধতিতে হিসাব করলে গ্রস রিজার্ভ এখন ২১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ আরও বেশি—২৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক পরিবর্তনের পাশাপাশি সরকারের ঋণ গ্রহণ প্রক্রিয়াও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
চলতি মাসেই আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি এবং এআইআইবি’র মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বাংলাদেশ সরকার প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পাচ্ছে বলে জানা গেছে। এই অর্থ ছাড় হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে পারে।
ঈদুল আজহার ছুটি চলাকালে টানা ১০ দিন ব্যাংক বন্ধ থাকলেও ২১ জুন পর্যন্ত প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ১৯৯ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার—যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে।
এই ঊর্ধ্বমুখী রেমিট্যান্স এবং বহুপাক্ষিক ঋণের মাধ্যমে আসা বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক চাপ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে একটি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।