রাজশাহীর দরগাপাড়া এলাকার দিঘাপতিয়ার জমিদার পরিবারের একটি পুরনো রাজবাড়ি ভাঙার সময় নিচতলা থেকে একটি সুড়ঙ্গ উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন দিঘাপতিয়ার রাজা হেমেন্দ্র কুমারের ছেলে সন্দীপ কুমার রায়। জনশ্রুতি রয়েছে, মহারানি হেমন্তকুমারী (১৮৬৯-১৯৪২) পুঠিয়া থেকে রাজশাহীতে আসার সময় এই বাড়িতে অবস্থান করতেন।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নিলামে বিক্রি হওয়া এই স্থাপনা ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছিল। তবে সুড়ঙ্গ পাওয়ার পর স্থানীয় ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক কর্মী, নাগরিক সমাজ এবং গবেষকরা স্মারকলিপি দিয়ে বাড়িটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন বাড়িটি ভাঙার কাজ স্থগিত করেছে। বোয়ালিয়া থানার ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা বাড়িতে গিয়ে ভাঙার কাজ বন্ধ করেছেন। তবে দোতলা অংশের বেশিরভাগ অংশ ইতোমধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে; মেঝের নিচের সুড়ঙ্গের ইটগুলো এখনও অবশিষ্ট।
বিশিষ্ট গবেষক ড. তসিকুল ইসলাম রাজা বলেন, “বাড়িটির প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব রয়েছে। এটি সংরক্ষণ করা উচিত ছিল।”
ভাঙার তদারকিতে থাকা মো. অপু জানান, “সুড়ঙ্গটি প্রাচীনকালে প্রাকৃতিক এসি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। ধনাঢ্য পরিবাররা ঘরের নিচে এভাবে সুড়ঙ্গ রাখত যাতে পানি জমে ঘর ঠাণ্ডা থাকে।”
জমির মালিক ছিলেন সন্দীপ কুমার রায়, যিনি রাজা হেমেন্দ্র নারায়ণ রায়ের ছেলে। সূত্র অনুযায়ী, ১৯৮১ সালে জমিটি ভিপি (শত্রু সম্পত্তি) ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারে ১৯৭৪ সালের পর ভিপি ঘোষণা বৈধ নয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, “বাড়িটির প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য যাচাইয়ের জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা এসে মূল্যায়ন করবে, যদি সংরক্ষণযোগ্য হয় তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

