দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বিরল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, মিথ্যা অভিযোগ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুরে লিখিত অভিযোগে সহকারী শিক্ষক ইকরামুল হক জানান, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তি উপজেলা প্রশাসন ও বিদ্যালয় সভাপতির কাছে অভিযোগপত্র জমা দেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি আলোচনায় আসে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে তদন্তের দিন ধার্য করে।
অভিযোগকারী শিক্ষক দাবি করেন, তদন্ত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে প্রধান শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করান। অভিযোগে বলা হয়, তদন্তের নির্ধারিত দিনেই (৭ ডিসেম্বর) মোছা. শাহানাজ বেগম নামে এক নারী দিয়ে তার বিরুদ্ধে একটি দরখাস্ত জমা দেওয়া হয়, যেখানে ঘটনার নির্দিষ্ট সময়, স্থান ও তারিখ উল্লেখ নেই। দরখাস্তে উল্লেখ করা হয় যে, ১৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে ওই নারীর মেয়ে বিষয়টি তাকে জানিয়েছে। তবে এতদিন পর এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তের দিনেই অভিযোগ দায়ের করায় বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন তিনি।
সহকারী শিক্ষকের অভিযোগ, এই মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ থেকে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করেছেন।
লিখিত অভিযোগে আরও গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়। সহকারী শিক্ষক দাবি করেন, গত ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটে বিরল উপজেলা অফিসের প্রধান ফটকের পাশে একটি চায়ের দোকানের সামনে ৫-৬ জন অপরিচিত ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং অপহরণের চেষ্টা চালায়। এ সময় পথচারী ও দুইজন শিক্ষক সহকর্মীর সহায়তায় তিনি রক্ষা পান। সাক্ষী হিসেবে তিনি দুই শিক্ষকের নাম উল্লেখ করেন।
অভিযোগকারী শিক্ষক তার আবেদনে বলেন, এ ঘটনায় তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং পুরো বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন। তাই তার বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পাশাপাশি তাকে আহত বা নিহত করার অপচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযোগপত্রের অনুলিপি দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড, বিরল উপজেলা ভূমি অফিস, বিরল থানা এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছেও পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

