দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের নবনির্বাচিত ২৫ জন প্রতিনিধি বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। তবে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের নির্বাহী সদস্য আকাশ দাস শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।
বেলা ১২টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ড. মোহাম্মদ ইউনুস ভবনের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শপথ অনুষ্ঠানে চাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথবাক্য পাঠ করান। হল সংসদের প্রতিনিধিদের শপথ করান তাঁদের নিজ নিজ হলের প্রভোস্টরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয়। এরপর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হৃদয় চন্দ্র তড়ুয়া ও শহীদ ফরহাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এর আগে বুধবার রাতে আকাশ দাস তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বুয়েটে সংঘটিত ধর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করেন। ওই মন্তব্যকে ‘নারীবিদ্বেষী’ ও ‘ধর্ষণকে স্বাভাবিকীকরণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট, ছাত্রদল, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, ইসলামী ছাত্র মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেন। তাঁরা আকাশ দাসের নিঃশর্ত ক্ষমা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানান।
এ বিষয়ে আকাশ দাস বলেন, “আমি গেলে সংঘাতমুখী পরিস্থিতি হতো, তাই যাইনি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, প্রশাসন নিশ্চয়ই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।”
চাকসু নির্বাচন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, “চাকসু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি অপরিহার্য অঙ্গ। নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিজেদের দাবি ও মত প্রকাশ করতে পারবে।”
সহসভাপতি (ভিপি) মো. ইব্রাহীম বলেন, “চাকসু নির্বাচন আমাদের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। নানা বিতর্ক ও বাধা পেরিয়ে আমরা একটি সুন্দর ক্যাম্পাস গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাব।” আকাশ দাসকে ঘিরে তৈরি বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন।”
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, ডিন, সিন্ডিকেট সদস্য, নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক চাকসু নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত মো. ইব্রাহীম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সাঈদ বিন হাবিব এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ছাত্রদলের আয়ুবুর রহমান। ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টি পদে জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট।