জাতীয় নির্বাচনে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ প্রতীকে অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলছে, এই বিধান ছোট দলগুলোকে জোটে অংশ নেওয়ার আগ্রহ কমিয়ে দেবে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে আমরা সম্মত ছিলাম। কিন্তু ২০/১ উপধারায় জোটভুক্ত দলগুলোকে অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল—সেটি এখন বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে ছোট দলগুলোর নেতৃত্বে থাকা নেতারা বঞ্চিত হবেন।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আইন একতরফাভাবে কেন পাস করা হলো?”
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি চায় বহুদলীয়, অংশগ্রহণমূলক সংসদ। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আরপিও পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি। দলটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আপত্তিপত্র দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধন অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের পর আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, “এবার থেকে রাজনৈতিক জোট নির্বাচনে অংশ নিলেও প্রতিটি দলকে নিজস্ব প্রতীকে অংশ নিতে হবে। এতে ভোটাররা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবেন কোন দলকে ভোট দিচ্ছেন।”
তিনি আরও জানান, এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন। এছাড়া ইভিএম সংক্রান্ত বিধান বাতিল করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পলাতক আসামিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি উৎস থেকে সব আয় ও সম্পত্তির বিবরণ নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে, যা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।”
তিনি জানান, নির্বাচনে জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে এবং ‘না ভোট’-এর বিধান যুক্ত করা হয়েছে। “যদি কোনো আসনে একমাত্র প্রার্থী থাকেন, ভোটাররা চাইলে ‘না ভোট’ দিতে পারবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘না’ হলে পুনঃনির্বাচন হবে,” বলেন আসিফ নজরুল।
তিনি আরও জানান, ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকতে পারবেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান বা দান ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে এবং দাতার ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।
সবশেষে তিনি বলেন, “নির্বাচনি এলাকায় ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পেলে নির্বাচন কমিশন পুরো এলাকার ভোট বাতিল করার ক্ষমতা রাখবে।”







