আবুল হাসনাত শামীম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের যাদুপুর পানের হাটে একপণ পান বিক্রি হচ্ছে মাত্র পাঁচ টাকায়। হঠাৎ দামের ধস নেমে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পান চাষীরা।
বর্ষার কারণে উৎপাদন বেড়েছে, কিন্তু চাহিদা না থাকায় দর ভেঙে পড়েছে। গত বছর বড় পান বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এবার সেই বড় পান মিলছে মাত্র ৩০ টাকায়। মাঝারি পান ১৫ টাকা, আর ছোট পান মাত্র ৫ টাকা।
যাদুপুরের এই হাট জেলায় একমাত্র পানের হাট। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাইকাররা এসে পান কিনে নিয়ে যান খুচরা বাজারে।
চাষীদের আক্ষেপ—একপণ পান মানে ৮০টা পাতা, অথচ দাম মিলছে মাত্র পাঁচ টাকা। বাজারে একখিলি পানই বিক্রি হয় পাঁচ টাকা। চাষীরা বলছেন, এত কম দামে গত ১০ বছরে পান বিক্রি করতে হয়নি।
চাষী জুল্লুর রহমান বলেন, “প্রতিদিন হাটে আসি। পান বিক্রি করে সংসারের খরচই ওঠে না।”
চাষী গোলাম মোস্তফার অভিযোগ, “৭০০ টাকার পান পাইকাররা কিনছে মাত্র ৬০ টাকায়। গত বছর বড় পান বিক্রি করেছি ২০০ টাকায়। এবার ছোট পান কিনতেই চাইছে না।”
চাষী ময়েজ উদ্দিন বলেন, “বর্ষায় বরজে খরচ বেড়েছে। সার, খৈল, কীটনাশক—সবকিছুতেই খরচ বেশি। রোগবালাইও বাড়ছে। ফলে আয় তো দূরের কথা, খরচও ওঠে না।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইয়াছিন আলী বাংলাবাজার পত্রিকাকে জানান, “চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমিত আয়তনে পান চাষ হয়। সদর উপজেলায় ১৫ হেক্টর ও শিবগঞ্জে পাঁচ হেক্টর জমিতে পান চাষ হচ্ছে। বর্ষার বৃষ্টিতে উৎপাদন বেশি হয়, দাম কমে যায়। এতে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোগ প্রতিরোধে ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একইসাথে কৃষকদের জেলার বাইরে যেখানে বাজার ভালো, সেখানে পান সরবরাহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”