সিলেট
সুনামগঞ্জে জেলা পুলিশের ছাতক থানার গোলাম কিবরিয়া হাসানকে খুলনা রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) পুলিশ হেডকোয়াটার্সের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল আইজি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে জনসার্থে বদলি করা হয় ।
প্রজ্ঞাপনে সিলেট রেঞ্জের সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের ছাতক থানা থেকে বদলিকৃত কর্মস্থল খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে যোগদানের নিমিক্তে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছাড়পত্র গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করা হয়। অন্যথায় পরদিন ১৬ ফেব্রুয়ারি তাৎক্ষণিক সময়ে স্ট্যান্ড রিলিজ হিসাবে গণ্য করা হবে।
২০০৫ সালে গোলাম কিবরিয়া হাসাব সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশ, র্যাবসহ সিলেট রেঞ্জের হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পুলিশ ফাঁড়িতে ফাঁড়ি ইনচার্জ একই জেলার মাধবপুর থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিবরিয়া যেখানেই পোষ্টিং নিয়েছেন সেখানেই দু’হাতে কামিয়েছেন ঘুস দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা।
গোলাম কিবরিয়া হাসান পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশ^ম্ভরপুর থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসাবে কর্মরত থেকে নানা অনিয়ম ঘুস দুর্নীতি, পোষাকী ক্ষমতার অপব্যবহার,সীমান্ত চোরাকারবারিদের সাথে অতি সখ্যতার কারনে জেলার তাহিরপুর সার্কেল (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ) অফিসে ফের পুলিশ পরিদর্শক হিসাবে বদলি করা হয়।
এরপর তাহিরপুর সার্কেল অফিসে থাকা অবস্থায় সেখানেই পূরনো কৌশলে তৎকালীন সময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের গুটি কয়েক নেতাকর্মীদের সাথে উপরি আয়ের ধান্দায় চাঁদাবাজি, সীমান্ত চোরাচালান , খনিজ বালি পাথর চুরিকান্ডে গোপনে গভীর সখ্যতা তৈরী করেন। ফের তাকে জেলার দিরাই থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসাবে বদলি করা হয়।
বদলিকৃত দিরাই থানায় যোগদান না করে কৌশলে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন কিবরিয়া হাসান। এক পর্যায়ে তদবীর বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজেকে বিএনপি ঘরানার পুলিশ পরিদর্শক হিসাবে বৈষম্যের শিকার দাবি করতে থাকেন।
২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রবাসী অধ্যুষিত শিল্প নগরী, সীমান্ত চোরাচালান, অপরাধ প্রবণ থানা খ্যাত ছাতক থানার ওসি হিসাবে কাঙ্কিত গুড স্টেশনে পোষ্টিং বাগিয়ে নেন তিনি।
যশোর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের স্টেনোগ্রাফার কাম কম্পিউটার অপারেটর ও সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের জগন্নাথপুর ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত টিআইর হাত ধরে রাতারাতি ছাতক থানায় ওসির পোষ্টিং বাগিয়ে নেন বলে গোলাম কিররিয়া হাসানের বিষয়ে খোদ পুলিশ বাহিনীর মধ্যেই গুঞ্জন উঠে।
ছাতক থানায় যোগদানের পর থেকেই ঘুস,দুনীর্তি, মামলা,গ্রেফতার বাণিজ্য,মামলায় পলাতক থাকা পতিত আওয়ামী সরকারের নেতাকর্মীদের সাথে গোপন সমঝোতা,নিজেকে বিএনপি ঘরানার ওসি দাবি করে দ্বৈত নীতি অবলম্বন করে বিভিন্ন মহল থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করা, সুরমার নৌপথে চাঁদাবাজি চক্রের নিকট থেকে এমনকি বিভিন্ন অবৈধ আয়ের উৎস থেকে মাসোহারা আদায়, সীমান্ত চোরাচালান বাণিজ্যে, গ্রেফতার আসামির পালিয়ে যাওয়া, আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে ভুরিভোজ (দাওয়াত) খাওয়া সহ একের পর এক অভিযোগ উঠে আসে তার বিরুদ্ধে। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি ঢাকাগামী দুটি বাসে ছাতক থানার এলাকায় গণডাকাতি, চুরি, ছিনতাই,মাদক কারবারিদের প্রসার বেড়ে যাওয়া সহ আইনশৃস্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে ছাতক থানা এলাকায়। এসব বিষয় নজরে আসারপর গোয়েন্দা সংস্থা সহ পুলিশ হেডকোয়াটার্স গোপন তদন্তে নামে।
সিলেট-০৬-০২-২৫