মানিকগঞ্জে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার বাউলশিল্পী আবুল সরকারের ভক্ত-অনুরাগীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২৩ নভেম্বর) জেলা শহরের দক্ষিণ সেওতা এলাকায় ‘মানিকগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও তৌহিদী জনতা’ ব্যানারে থাকা একদল ব্যক্তি এবং বাউলদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিন বাউলশিল্পী আহত হয়েছেন।
রবিবার বেলা ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল ১০টায় ‘তৌহিদী জনতার’ ব্যানারে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে পোস্ট অফিস মোড়ে সমাবেশ করে। সমাবেশে হাফেজ মাওলানা আশিকুর রহমান, মাওলানা মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা মুফতি মামুনুর রশীদ, মাওলানা মুফতি নুরুল ইসলামসহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশ শেষে তারা বাউল শিল্পী আবুল সরকারের শাস্তি ও বাউলদের ‘ইসলামবিরোধী’ কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
অন্যদিকে, এই সমাবেশ চলাকালে শহীদ মিনারের পাশে বাউলশিল্পী আবুল সরকারের ভক্ত-অনুরাগীরা অবস্থান নেন। এসময় ‘তৌহিদ জনতার’ সমাবেশের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। হামলা থেকে বাঁচতে কয়েকজন পুকুরে নামেন। এই হামলায় তিনজন বাউলশিল্পী আহত হন।
আহতরা হলেন:
শিবালয় উপজেলার শাকরাইল গ্রামের আব্দুল আলীম (২৫)
সিংগাইরের তালেবপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম (২৯)
হরিরামপুরের কামারঘোনা গ্রামের জহিরুল ইসলাম (৩২)
পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, “তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিল শান্তিপূর্ণভাবেই শহরে প্রবেশ করে। হঠাৎ করে মিছিলের ভেতর থেকে কিছু লোকজন বাউলদের ধাওয়া দেয়। মুহূর্তেই পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং তিন বাউলশিল্পী আহত হন।” ওসি আরও জানান, এই ঘটনায় কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওরের জাবরা এলাকায় গানের আসরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে বাংলাদেশ বাউল সমিতির সভাপতি আবুল সরকারের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর মুফতি আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে ঘিওর থানায় ধর্ম অবমাননার একটি মামলা করেন। রবিবার দুপুরে আবুল সরকারের জামিন শুনানি হলেও আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।







