শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে বেসরকারি খাতের পুঁজি ও উদ্ভাবনকে কাজে লাগানো প্রয়োজন বলে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি), বাংলাদেশের সঙ্গে এক সংলাপে ইউনিসেফের প্রাইভেট ফান্ডরেইজিং ও পার্টনারশিপস বিভাগের পরিচালক কার্লা হাদ্দাদ মারদিনি এ আহ্বান জানান।
সংলাপে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতকে শিশু অধিকার ও টেকসই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যুক্ত করার সম্ভাবনা ও দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই সংলাপটি রাজধানীর গুলশানে আইসিসি বাংলাদেশের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, “আইসিসি বাংলাদেশ দায়িত্বশীল ব্যবসা পরিচালনা ও নৈতিক কর্পোরেট চর্চা প্রচারে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এটি দেশের জাতীয় অগ্রাধিকার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।” তিনি আরও জানান, আইসিসি বাংলাদেশ নিয়মিতভাবে ইউনিসেফের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের সহায়তায় ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে গাজার শিশুদের চিকিৎসা ও খাদ্যসহ মানবিক সহায়তার জন্য তিন কোটি টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।
ইউনিসেফের পরিচালক কার্লা হাদ্দাদ মারদিনি বলেন, “বেসরকারি খাত সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। শুধু আর্থিক সহায়তায় নয়, তাদের প্ল্যাটফর্ম, প্রভাব ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে শিশু অধিকার, লিঙ্গ সমতা এবং তরুণদের ক্ষমতায়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।” তিনি আইসিসি বাংলাদেশের নেতৃত্বকে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে একত্রিত করে যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সংলাপে উপস্থিত ছিলেন আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এ. কে. আজাদ, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি. রহমান, ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার বিদ্যা অমৃত খান, প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেডের এমডি ফজলুল হক, উত্তরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, সায়হাম কটন মিলসের এমডি প্রকৌশলী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, আইসিসি বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল আতাউর রহমান, ইউনিসেফ জেনেভার চিফ অব কমিউনিকেশন মিগুয়েল মাতেওস মুনোজ, কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট ক্লেয়ার ম্যাককিভার, সোশ্যাল পলিসি স্পেশালিস্ট হাসিনা বেগম, ফান্ডরেইজিং ও পার্টনারশিপ অফিসার মো. সামিন সালেকিন, আইসিসি বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার অজয় বিহারী সাহা ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দা শাহনেওয়াজ লতিকা।
সভায় উভয় পক্ষ ভবিষ্যৎ সহযোগিতার জন্য একটি যৌথ রোডম্যাপ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়। রোডম্যাপের লক্ষ্য হবে: কর্পোরেট সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, নীতিগত সংলাপ জোরদার করা এবং শিশু ও তরুণদের কল্যাণে সম্প্রদায়ভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন। এটি ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর স্বাক্ষরিত আইসিসি বাংলাদেশ-ইউনিসেফ সমঝোতা স্মারকের আওতায় পরিচালিত হবে।