প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, সংবিধান বাতিল করা জুলাই বিপ্লবের লক্ষ্য ছিল না। বরং সংবিধানের সঙ্গে বিচার বিভাগের সম্পর্ককে আরও বিশুদ্ধ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করাই ওই অভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্য ছিল।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) অবসরের আগে আপিল বিভাগে শেষ কর্মদিবসে দেওয়া বিদায়ী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যতদিন বিচার বিভাগের মৌলিক মূল্যবোধ অটুট থাকবে, ততদিন সুপ্রিম কোর্ট ন্যায়বিচার ও নাগরিক স্বাধীনতার শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে ভূমিকা পালন করে যাবে। তিনি উল্লেখ করেন, বিচার বিভাগকে অবশ্যই বর্তমান সংবিধানের মূল কাঠামো ও মৌলিক নীতিমালা মেনে চলতে হবে।
বিদায়ী বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, সংবিধানের মূল কাঠামো নীতির মধ্যে ক্ষমতার পৃথকীকরণ, বিচারিক স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, মৌলিক অধিকার এবং জনগণের সার্বভৌমত্বের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব নীতিই বিচার বিভাগের কার্যক্রমের ভিত্তি হওয়া উচিত।
বিচার বিভাগের শক্তি প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই শক্তি কোনো একক দফতর বা ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং সততা, পেশাদারিত্ব ও দূরদর্শিতার সঙ্গে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার সম্মিলিত সংকল্পের মধ্যেই বিচার বিভাগের প্রকৃত শক্তি নিহিত।
এদিকে, প্রধান বিচারপতির শেষ কর্মদিবস উপলক্ষে আপিল বিভাগের এজলাসেই তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবং সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিদায়ী অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের বিচারিক অবদান, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় তার অবস্থানের প্রশংসা করেন।

