কিয়েভ, ফেব্রুয়ারি ২০২৫:
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, যদি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোনো শান্তিচুক্তি করেন, তবে ইউক্রেন ছাড়া তা মেনে নেওয়া হবে না।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, “ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের বাদ দিয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে না। আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং ভূখণ্ড রক্ষা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য, এবং কেউ আমাদের পক্ষে কোনো চুক্তি করতে পারে না।”
ট্রাম্পের দাবি ও ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া
ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েকবার বলেছেন, তিনি যদি আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন, তবে ক্ষমতা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। তবে তিনি কীভাবে এটি করবেন, সে সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ট্রাম্প হয়তো পুতিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কোনো চুক্তির চেষ্টা করবেন, যেখানে ইউক্রেনকে তার কিছু দাবি থেকে সরে আসতে বলা হতে পারে। তবে জেলেনস্কি স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি এমন কোনো চুক্তি মেনে নেবেন না যা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করবে।
“আমরা স্বাধীন জাতি, আমাদের জনগণ রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করছে। কেউ আমাদের ভূখণ্ড নিয়ে দর কষাকষি করতে পারে না,” বলেন জেলেনস্কি।
রাশিয়ার অবস্থান
রাশিয়া এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে পুতিন কয়েকবার বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করে, তাহলে যুদ্ধ দ্রুত শেষ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তবে তিনি ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তা কমিয়ে দিতে পারেন, যা যুদ্ধের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে।
ইউরোপীয় মিত্রদের উদ্বেগ
ইউক্রেনের প্রধান মিত্র ইউরোপীয় দেশগুলোও উদ্বিগ্ন যে, ট্রাম্প যদি প্রেসিডেন্ট হন, তবে তিনি ন্যাটোর প্রতি তার আগের মতো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নাও থাকতে পারেন।
ফ্রান্স, জার্মানি, এবং যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং যুদ্ধ বন্ধের জন্য ইউক্রেনকে ছাড়া কোনো আলোচনা গ্রহণযোগ্য হবে না।
শান্তি আলোচনা সম্ভব?
যদিও কূটনৈতিক আলোচনা ছাড়া যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা কম, তবুও বিশ্লেষকরা বলছেন যে, ট্রাম্প যদি নির্বাচিত হন, তবে তিনি একটি সমঝোতার চেষ্টা করবেন। তবে সেটা কেমন হবে এবং ইউক্রেন তা মেনে নেবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন।
জেলেনস্কি বলেছেন, “আমরা শান্তি চাই, তবে সেটা ন্যায়ের ভিত্তিতে হতে হবে। আমাদের ভূখণ্ড রক্ষা করেই শান্তি আসতে হবে, আত্মসমর্পণের মাধ্যমে নয়।”
এই পরিস্থিতিতে, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয়, ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।