সত্যজিৎ দাস (মৌলভীবাজার প্রতিনিধি):
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. হরিপদ রায়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের কলেজ রোডের জয়নগরপাড়া আবাসিক এলাকায় নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ জহিরুল ইসলাম মুন্না জানান,‘ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ অভিযানের অংশ হিসেবে ডা. হরিপদ রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,২০২৪ সালের ৩ ও ৪ আগস্ট শ্রীমঙ্গলের চৌমুহনা চত্বরে প্রকাশ্যে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র মহড়ার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ডা. হরিপদ রায়ের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। সেদিনের ঘটনায় ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলার কয়েকজন আসামি এখনও পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে ডা. হরিপদ রায় দীর্ঘদিন ধরে একজন মানবিক ও সমাজসেবী চিকিৎসক হিসেবেও পরিচিত। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালকের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন। করোনা মহামারির সময় তিনি একজন ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসেবে স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ডা. হরিপদ রায় ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক সোসাইটির পক্ষ থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত হন।
তার শৈশব ও প্রাথমিক শিক্ষাজীবন হবিগঞ্জ শহরে হলেও তিনি মৌলভীবাজার জেলার বাহুবল উপজেলার খাগাউড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই গ্রামটি কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীসহ একাধিক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত। নিজ শেকড়ের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রেখে ডা. রায় নিয়মিত নিজ এলাকায় সামাজিক ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
ডা. হরিপদ রায়ের দুই সন্তানও জনসেবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে চিকিৎসক পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। এদিকে,তার গ্রেপ্তারের ঘটনায় শ্রীমঙ্গলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে,আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং চলমান অভিযানে অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

