শেরপুর প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা যখন খুবই সীমিত ছিল, তখন থেকেই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতির তরুণ সাইবার বিশেষজ্ঞ আব্দুল্লাহ আল নোমান। ২০১৪ সাল থেকে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ তিনি দেশের জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, ইনফ্লুয়েন্সার এবং সাধারণ মানুষের কাছে একটি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য নাম হয়ে উঠেছেন।
ফেসবুক পেজ CyberCrack24 Official-এর মাধ্যমে গত কয়েক বছরে তিনি ৫০ জনেরও বেশি জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। পেজ বা অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া, ফিশিং আক্রমণ, নকল কপিরাইট স্ট্রাইক, অ্যাক্সেস সংক্রান্ত জটিলতা এবং বিভিন্ন সাইবার হুমকির সফল সমাধান দিয়ে তিনি অনেককে স্বাভাবিক ডিজিটাল জীবনে ফিরিয়ে এনেছেন।
বিশেষ করে অনলাইন হয়রানি (Harassment) প্রতিরোধে তাঁর ভূমিকা দেশে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিনি একাই ২০০০-এরও বেশি অনলাইন হেরেসমেন্ট কেস সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সমাধান করেছেন। সাইবার অপরাধের শিকার নারী-পুরুষ তাঁর সহায়তায় পুনরুদ্ধার করেছেন নিজ নিজ ডিজিটাল নিরাপত্তা ও আত্মবিশ্বাস।
এছাড়াও সাইবার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তিনি ১,০০০-এরও বেশি হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধার করে ভুক্তভোগীদের হাতে তুলে দিয়েছেন। মানবিক এই কার্যক্রমের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে।
আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটারের প্রতি তাঁর অদম্য আগ্রহ ছিল। মায়ের চাকরির সুবাদে বাসায় প্রথম কম্পিউটার আসার পর বিভিন্ন প্রযুক্তিগত গবেষণা ও সিনেমা দেখে তাঁর মনে এথিক্যাল হ্যাকিংয়ের প্রতি আগ্রহ জন্ম নেয়। সেই আগ্রহ থেকেই ধাপে ধাপে সোশ্যাল মিডিয়াসহ ওয়েব নিরাপত্তা, বাগ হান্টিং ও ফিশিং প্রতিরোধে দক্ষতা অর্জন করেন।
পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, ইউটিউবার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কাজের সুযোগ পান, যা তাঁর অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করে। বর্তমানে তাঁর গড়ে তোলা CyberCrack24 একটি দেশব্যাপী পরিচিত সাইবার সলিউশন এজেন্সি হিসেবে কাজ করছে।
এজেন্সির বিভিন্ন পেইড কোর্স ও সেবার আয় থেকে অর্জিত অর্থের ৫০ শতাংশ জনকল্যাণে ব্যয় করা হয়, যা প্রযুক্তিনির্ভর সামাজিক সেবার একটি বিরল উদাহরণ।
এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন—
মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমার প্রথম কাজ। কেউ যেন অনলাইনে প্রতারিত বা হয়রানির শিকার না হয় এই স্বপ্ন নিয়েই আমি প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছি।
সবশেষে তিনি ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে মানুষের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।

