শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ব্রম্মোত্তর পশ্চিমপাড়ায় আগুনে ৮টি পরিবারের ৩০টি ঘর মালামালসহ সম্পূর্ণরূপে পুড়ে ছাই হয়েছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ৮ টা থেকে সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

জানা যায়, ওই এলাকারমৃত ওসমান আলীর ছেলে সেকেন্দার আলীর বাড়িতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।ঘনবসতিপূর্ণ পাড়া হওয়ায় পাশাপাশি অনেক বাড়ি-ঘরের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং শোয়ারঘর, রান্না ঘর ও গোয়ালঘর সম্পূর্ণরুপে ভস্মীভূত হয়েছে। সেই সাথে ঘরগুলোর আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ধান-চাল, নগদ টাকাসহ সবধরনের মালামাল পুড়ে গেছে।
এতে কোন মানুষ হতাহত না হলেও ২ টি গরু ও ২ টি ছাগল মারা গেছে। সব মিলিয়ে আনুমানিক ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকান্ডের ৩০ মিনিট পর রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুনে সেকেন্দার আলীর ২ টি সেমিপাকা টিনসেড ঘরসহ মালামাল পুড়ে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তার ভাই সাইদুল ইসলামেরও সম পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগুনে তার নিজের সহ ছেলেদের ১০ টি টিনসেড সেমিপাকা ঘর পুড়ে গেছে। তাদের ১ টি গরু ও ২ টি ছাগল পুড়ে মারা গেছে।
তাছাড়া মকছেদ আলীর ছেলে বাদশা মিয়াসহ তার ছেলেদের শোয়ার ঘর ৮ টি, রান্না ঘর ২ টি আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সামগ্রী সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। এতে তাদেরও প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আর মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল কাদের ও তার সন্তানদের নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ ৭ টা শোয়ার ঘর, ২ টা রান্না ঘর এবং ১ টা গরু পুড়ে মারা গেছে। এতে এই পরিবারেরও প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লানচু হাসান চৌধুরী বলেন, আগুনের ভয়াবহতা ব্যাপক ছিল তাই মূহুর্তে ৮ টি পরিবারের ৩০ টি ঘর পুড়ে গেছে। এসব পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। আমরা প্রাথমিক ভাবে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কম্বল দেয়াসহ শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করেছি।
এদিকে ঘটনার সময় সৈয়দপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিমসহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে অংশ গ্রহণ করেন। পরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেন। একইসাথে তাদের পূনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তারাগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরিফ আব্দুল্লাহ বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। সার্বিক তদন্ত শেষে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা যাবে। তবে আনুমানিক ধারণা করা হচ্ছে যে, তা কোটি টাকার বেশি হতে পারে। (ছবি আছে)
শাহজাহান আলী মনন
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি