নরসিংদীর পলাশ উপজেলা ছিল শুক্রবার সকালে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের এই কম্পনে দেয়াল ধস, ভবনে ফাটল ও জমি দেবে যাওয়ার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত দুইজন, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।
পলাশের ওয়াপদা গেট এলাকার গৃহবধূ সামসুন নাহার মলি বলেন, “এমন ঝাঁকুনি জীবনে দেখিনি। দেয়াল ফেটে গেছে। স্বামী বাইরে বের হতে গিয়ে আহত হয়েছেন।”
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, কম্পনের কেন্দ্র নরসিংদীর মাধবদী এলাকায়। ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয় ঘোড়াশাল, ডাংগা ও আশপাশের এলাকায়।
পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের সামনে রাস্তায় বড় ফাটল। নিকটবর্তী গরুর খামারের মাটি দেবে যাওয়া।
বহুতল ভবনের দেয়াল ও স্তম্ভে ফাটল। ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যন্ত্রপাতি ক্ষতি ও আগুন। শীতলক্ষ্যা নদীর পুরোনো রেলসেতুতে ফাটল। বাজার ও দোকানপাটে মালপত্র নষ্ট। ডাংগা খেয়াঘাটের মাঝি সুবাদ ভৌমিক জানান, নদীর পানি হঠাৎ ওপরের দিকে উঠে প্রচণ্ড ঢেউ তুললে তারা ভয় পেয়ে যান।
কারখানা এলাকার রাতের প্রহরী ফয়সাল বলেন, প্রথমে বড় লরি যাচ্ছে ভেবে ভুল করেছিলেন তাঁরা—ক্ষণিকেই বুঝতে পারেন ভূমিকম্প হয়েছে। কয়েকজন ভয়ে জ্ঞান হারান।
মানুষের আতঙ্ক, দোকানপাট বন্ধ
দোকানের তাক ভেঙে মালপত্র নিচে পড়ে গেছে
ঘরের আসবাব, ফ্রিজ, টিভি ভেঙে যাওয়ার ঘটনা
অনেকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে আহত
বাজার এলাকায় এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে
শিশুরাও আতঙ্ক থেকে বের হতে পারছে না। ঘোড়াশালের প্লে-শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়াত বলে, “আমি ভয়ে কেঁদেছি।”
এসএ প্লাজা মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন বলেন, “মনে হচ্ছিল সব ভেঙে পড়ছে। সবার কান্নাকাটি শুরু হয়।”
আরেক দোকানি তাজুল ইসলাম জানান, মার্কেটের রেলিং ভেঙে তাঁর দোকানের ওপর পড়েছে—তিনি জীবন নিয়ে বেঁচে আছেন বলেই মনে করেন সৌভাগ্য।
পলাশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান—বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কারখানার ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করা হয়েছে। সরকারি খাদ্যগুদামে ব্যাপক ক্ষতি, দ্রুত চাল সরানো হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে
ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে সহায়তার জন্য অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।

