আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) জানিয়েছে, দেশের মোট ভোটকেন্দ্রের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি এবার ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণীতেও সহিংসতা, কেন্দ্র দখল ও গুজব ছড়ানোর আশঙ্কা উল্লেখ করা হয়েছে।
এসবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৮ হাজার ৬৬৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ৮ হাজার ২২৬টি কেন্দ্রকে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, মোট কেন্দ্রের প্রায় ৬৭ শতাংশই নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে।
গত ২০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত বৈঠকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। রোববার বৈঠকের কার্যবিবরণী অনুমোদনের পর বিষয়টি জানা যায়।
বৈঠকে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা বলেন—
বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হলে সেনাবাহিনী নির্বাচনে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ ও পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন হতে পারে।
ড্রোন ব্যবহার করে তাৎক্ষণিক নজরদারির সুযোগ দিলে সহিংসতা প্রতিরোধ সহজ হবে।
চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে তিন দিন, নির্বাচনের দিন এবং পরে চার দিন—মোট আট দিন বাহিনী মাঠে রাখা যেতে পারে। বর্তমানে তারা ৬২টি জেলায় ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় দায়িত্ব পালন করছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য প্রতিনিধিরা জানান—
ভোটের সময় কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই ও হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহ বাড়তে পারে।
নির্বাচনে অবৈধ অর্থের প্রবাহ রোধে সিআইডিকে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে গুজব ছড়ানোর ঝুঁকি বেশি।
র্যাব সাইবার ইউনিট ইতোমধ্যে এ ধরনের কনটেন্ট নজরদারি করছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বৈঠকে বলেন—
“অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। কমিশনের একার পক্ষে এত বড় কর্মযজ্ঞ সম্ভব নয়। তাই সমন্বিত সহযোগিতাই সফল নির্বাচনের মূল চাবিকাঠি।”

