নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, কারো চাহিদা বা অনুরোধ বিবেচনায় নয়, কমিশনের নিজস্ব সিদ্ধান্তে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,
“কোনো দলের বিবেচনায় নয়, কিছু প্রতীক নিয়ে বিরূপ মন্তব্য আসায় বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় শাপলা কলি যুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।”
তিনি আরও বলেন, “আগের তালিকায় থাকা ১১৫টি প্রতীকের মধ্যে ১৬টি বাদ দিয়ে নতুন করে কিছু প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে। এখন সংশোধিত তালিকায় মোট ১১৯টি প্রতীক রয়েছে। শাপলা কলির সঙ্গে আরও কিছু নতুন প্রতীক যুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে নতুন কোনো বিতর্কের কারণ দেখি না।”
এর আগে বৃহস্পতিবারই সংশোধিত প্রতীক তালিকা সংবলিত গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ইসি সচিব আখতার আহমেদের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৯৭২ সালের আর্টিক্যাল ৯৪ অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় সংশোধন আনা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত প্রতীকগুলোর মধ্যে রয়েছে — আনারস, গাভি, বই, রেল ইঞ্জিন, আম, গামছা, রিকশা, বাঘ, ঈগল, লাঙল, ঘুড়ি, বাইসাইকেল, শাপলা কলি, উদীয়মান সূর্য, দাঁড়িপাল্লা, সেলাই মেশিন, কলস, চেয়ার, হাত (পাঞ্জা), ধানের শীষ, হাতঘড়ি, নৌকা (স্থগিত), হাতি, মাছ, টিউবওয়েল, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, ফুটবল, ফুলকপি, মোরগসহ আরও অনেকে।
এদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দীর্ঘদিন ধরেই দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ দাবি করে আসছিল। নিবন্ধন আবেদনকালে তারা শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন প্রতীক প্রস্তাব করেছিল। পরবর্তীতে শুধু শাপলাতেই অনড় থাকে দলটি। তবে রাজনৈতিক দলের জন্য নির্ধারিত প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় ইসি তাদের আবেদন বারবার নাকচ করে দেয়।
সবশেষ ৭ অক্টোবর এনসিপি আবারও শাপলা প্রতীক চেয়ে ইসিতে সাতটি নমুনাচিত্র পাঠায়। তবে কমিশন তা গ্রহণ না করে জানায়, তালিকাভুক্ত প্রতীকগুলোর মধ্য থেকেই বেছে নিতে হবে।
অবশেষে আজ (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশন সংশোধিত প্রতীক তালিকায় ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এর আগে ২৭ অক্টোবর ইসি সচিব আখতার আহমেদ স্পষ্ট করে বলেছিলেন,
“বিধিমালায় শাপলা প্রতীক না থাকায় এনসিপিকে সেটি দেওয়া সম্ভব নয়। কমিশন স্ববিবেচনায় অন্য প্রতীক নির্ধারণ করবে।”
তবে আজকের ঘোষণায় তিনি জোর দিয়ে বলেন, “শাপলা কলি যুক্ত করা কমিশনের নিজস্ব সিদ্ধান্ত—কোনো রাজনৈতিক দলের দাবি নয়।”







