স্টাফ রিপোর্টার:
আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের উপর পুলিশের হামলার ঘটনায় সাংবাদিক সমাজে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মিডিয়া উইংয়ের সদস্য ও দৈনিক ভোরের কাগজের সাংবাদিক মারুফ সরকার আহত হয়েছেন।
এছাড়া কালের কণ্ঠের খন্দকার আসিফুজ্জামান, সময়ের আলো-এর শ্রাবণ, ঢাকা পোস্ট-এর আলামিনসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক এই ঘটনায় হামলার শিকার হয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে পুলিশ আকস্মিকভাবে লাঠিচার্জ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। ঠিক তখনই পুলিশ সাংবাদিকদের লক্ষ্য করেও লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে মারুফ সরকারসহ অন্তত চারজন সাংবাদিক আহত হন।
আহত সাংবাদিকদের দ্রুত উদ্ধার করে কাছাকাছি একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মানবাধিকার সমিতির গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা
ঘটনার প্রতি তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন —
> “গণমাধ্যম একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সাংবাদিকদের উপর হামলা মানে স্বাধীন গণমাধ্যমের উপর সরাসরি আঘাত। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং আহত সাংবাদিক মারুফ সরকারের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করছি। অবিলম্বে দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাই।”
তিনি আরও বলেন —
> “যারা কলমধারী সাংবাদিকদের উপর হামলা করছে, তারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের শত্রু। এই ধরনের আচরণ সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
সাংবাদিক সমাজের প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া
ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ পৃথক বিবৃতি দিয়ে পুলিশের এই বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
তারা বলেন —
> “সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু বারবার সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা প্রমাণ করছে—গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আজ গুরুতরভাবে হুমকির মুখে।”
মারুফ সরকারের শারীরিক অবস্থা
বর্তমানে আহত সাংবাদিক মারুফ সরকার চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর হাতে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত।
সহকর্মীরা তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
গণতন্ত্র ও সংবাদস্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন
মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, সাংবাদিকদের উপর বারবার হামলা হচ্ছে অথচ বিচার হচ্ছে না — এটি দেশে মুক্ত সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বড় হুমকি।
তারা বলেন —
> “যে দেশে সাংবাদিকরা নিরাপদ নয়, সেই দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারও নিরাপদ থাকতে পারে না।”
আহত: মারুফ সরকার (ভোরের কাগজ), খন্দকার আসিফুজ্জামান (কালের কণ্ঠ), শ্রাবণ (সময়ের আলো), আলামিন (ঢাকা পোস্ট)







