দেশের একমাত্র প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকরা দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন, তবে গভীর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষার জন্য সরকারের ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
তবে দ্বীপের জেটির সংস্কারকাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস.এস. রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড জানিয়েছে, সাত কোটি টাকার প্রকল্পে ৭০টি পাইলিংয়ের কাজ প্রায় শেষ, বাকিটা রোলিং ও সিঁড়ি সংক্রান্ত কাজ চলছে। পর্যটকবাহী জাহাজ ঘাটে ভিড়তে পারবে না—এমন শঙ্কা থাকলেও সংস্কার শেষ করার চেষ্টা চলছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজ অনুমোদন পায়নি। নিরাপত্তার কারণে টেকনাফ নয়, কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনে চলাচল করবে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক মহিবুল ইসলাম বলেন, পর্যটকরা অনলাইনে টিকিট কিনবেন। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে; কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষার জন্য ১২ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
- পর্যটক যাতায়াতের নিয়মাবলী:
- নভেম্বর মাসে শুধুমাত্র দিবাকালীন ভ্রমণ, রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ।
- ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন অনুমোদিত।
- ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ।
- দৈনিক সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক।
- সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়া বন বা প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি করা যাবে না।
- মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ।
- একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বা নিষিদ্ধ পলিথিন বহন নিষিদ্ধ; নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
পর্যটকবাহী হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির আহ্বায়ক আব্দুর রহমান জানান, দ্বীপে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এখনও হয়নি, তবে পরবর্তী দুই মাসে হোটেল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ সম্পন্ন করা হবে।
সরকার আশা করছে, এই নির্দেশনার মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের এক উদাহরণ হয়ে উঠবে।







