আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিদেশে অবৈধভাবে পাচার করা সম্পদ উদ্ধার সংক্রান্ত সরকারের পদক্ষেপের কারণে তার পরিবারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘শত শত কোটি টাকা’ ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি কেন্দ্র (ICSID)-এ সোমবার এই আবেদন জমা দেয়া হয়। এস আলম পরিবারের আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সম্পদ জব্দ, বাজেয়াপ্ত ও মূল্য ধ্বংসের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযান চালিয়েছে।
মামলাটিকে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য একটি সম্ভাব্য বাধা হিসেবে দেখানো হচ্ছে, কারণ সরকার এখনো শেখ হাসিনার শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া বিলিয়ন ডলার ফেরত আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত সরকারের ‘অর্থনীতির শ্বেতপত্রে’ বিদেশে পাচারের পরিমাণ আনুমানিক ২৩৪ বিলিয়ন ডলার হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর জানিয়েছেন, এস আলম পরিবার দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছে। এই অভিযোগের সঙ্গে পরিবার সম্পূর্ণ অমিল প্রকাশ করেছে এবং সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আইনজীবীরা সালিশি আবেদনে উল্লেখ করেছেন, সরকার এস আলম পরিবারের ব্যাংক হিসাব ও সম্পদ জব্দ করেছে, ‘ভিত্তিহীন’ তদন্ত চালিয়েছে এবং পরিবারকে লক্ষ্য করে ‘উসকানিমূলক প্রচার অভিযান’ চালিয়েছে। ফলশ্রুতিতে ‘শত শত কোটি ডলারের সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি’ হয়েছে।
এস আলম পরিবারের আবেদন ২০০৪ সালে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় দায়ের করা হয়েছে। আইনি নথি অনুযায়ী, পরিবারের সদস্যরা ২০২০ সালে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন এবং বর্তমানে সেখানেই বসবাস করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান মনসুর জানিয়েছেন, সালিশি আবেদনের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে পৌঁছালে সরকার যথাযথ প্রতিক্রিয়া জানাবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।







