জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজনের যারা বিরোধিতা করছেন তারা মূলতঃ নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছেন বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) এর নব নির্বাচিত সহ সভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। নীলফামারীর সৈয়দপুরে তাঁকে দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই কথা বলেছেন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টায় সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নীলফামারী জেলাস্থ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন রাবিয়ান ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি সংগঠন রাবি ভিপিকে ফুলের তোড়া ও সম্মাননা ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা প্রদান করে। এগুলো হলো, জেলা রাবিয়ান ক্লাব, সৈয়দপুর প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগ (বিআরইএল) সোস্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অফ সৈয়দপুর (সোস), বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবির সৈয়দপুর উপজেলা ও পৌর শাখা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নীলফামারী জেলা রাবিয়ান ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সাবেক অফিস সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম। উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও আল ফারুক একাডেমির প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি আলহাজ্ব মাজহারুল ইসলাম, পৌর আমীর শরফুদ্দিন খান, সেক্রেটারি মাওলানা ওয়াজেদ আলী, রংপুর মহানগর শিবির সভাপতি নুরুল হুদা, কারমাইকেল কলেজ সভাপতি আবু সুফিয়ান, নীলফামারী জেলা সভাপতি মাজেদুল ইসলাম।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহজাহান আলী মনন ও গোপাল চন্দ্র রায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার প্রকৌশলী শাহজাহান মোল্লা, সোস’র উপদেষ্টা সেকেন্দার আলী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক জাকির হোসেন।
রাকসু ভিপি জাহিদ আরও বলেন, গণভোট দেয়ার উদ্দেশ্য হলো জনগণের মতামত নেয়া। আগামীর বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ছাত্র-জনতা তথা তরুণ প্রজন্ম ও সাধারণ মানুষ কি চায়, কেন চায় আর কিভাবে চায় তার প্রকাশ ঘটবে গণভোটের মাধ্যমে। সে অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর ইশতেহারের ভিত্তিতে নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নিবে দেশবাসী।
এক্ষেত্রে গণভোট না করে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা না বুঝে এবং তাদের মতামতের মূল্যায়ণ না করে নিজেদের মত চাপিয়ে দেয়াটাতো স্বৈরাচারী আচরণ। এমন কর্মকাণ্ডের কারণে গণভোটের বিরোধীতাকারীরা জনসমর্থন ও ভালবাসা হারাবে। যা নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারার শামিল। আমরা সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাই যেন জন মতামতকে উপেক্ষা না করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ আরও বলেন, দেশের চারটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা যেভাবে আমাদের উপর আস্থা রেখেছে ইনশাআল্লাহ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আপামর জনতা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উপরও একইভাবে আস্থা রাখবে। কারণ জামায়াতের প্রার্থীরা একই আদর্শের। বরং তারা আরও বেশি সততা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। আমাদের শুধু শিবির ভোট দেয়নি, বরং সকল শিক্ষার্থী দিয়েছে। জামায়াতকেও সর্বস্তরের মানুষ ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।
ইতোপূর্বে জামায়াতের মাত্র দুইজন মন্ত্রী সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। সেসময় দুদক কর্তৃক তদন্তে সব এমপি মন্ত্রীর কোন না কোন অনিয়ম দূর্নীতি ধরা পড়লেও শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও শহীদ আলী আহসান মুজাহিদের সামান্যতম ত্রুটি পায়নি। তাদের দায়িত্বকালে তিনটি মন্ত্রণালয়ের বিন্দুমাত্র বিচ্যুতি আজও মেলেনি। আর অন্যদলগুলোর শাসন দেখেছে দেশের মানুষ। তারা এখন জামায়াতকে দেখতে চায়। ইনশাআল্লাহ সারাদেশের মত নীলফামারীর ৪ টি আসনেও বিজয় হবে।
এর আগে তিনি সৈয়দপুর শহরের শহীদ স্মৃতি অম্লান চত্বরে (জিআরপি মোড়) ২৮ অক্টোবর পল্টন ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সৈয়দপুর উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে সন্ধা ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ৬ হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করে।







