নাজুমল ইসলাম, (শরণখোলা, বাগেরহাট প্রতিনিধি):
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে ২০১৮ সালে ‘দস্যুমুক্ত’ ঘোষণা করা হলেও আবারও সেখানে দস্যুদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর থেকে পুরনো আত্মসমর্পণকারী ও নতুন গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত প্রায় ২০টি দস্যু বাহিনী সক্রিয় হয়েছে, বিশেষ করে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে।
গত এক মাসে শতাধিক জেলে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে দস্যুরা। প্রতি নৌকায় দিতে হচ্ছে ২০–৩০ হাজার টাকা চাঁদা, মুক্তিপণ আদায় হচ্ছে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। আতঙ্কে জেলে ও ব্যবসায়ীরা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
কোস্টগার্ড মংলা পশ্চিম জোনের স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান বলেন, “গত বছরের আগস্ট থেকে সুন্দরবনে দস্যুদের উৎপাত শুরু হয়েছে। এক বছরে ২৭টি অভিযানে ৪৪ দস্যু আটক ও বিপুল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।”
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “ডাকাতদের সঙ্গে লড়াই করার মতো আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। তবে স্টাফদের আগ্নেয়াস্ত্র ও জনবল বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, “দস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে টেকসই কর্মসংস্থান ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করা জরুরি। নচেৎ সুন্দরবন আবারও দস্যুদের রাজত্বে পরিণত হবে।
উপকূলের জোয়ার-ভাটার সঙ্গে লুকিয়ে আছে জেলেদের কান্না, প্রশাসনের সংগ্রাম আর দস্যুতার অন্ধকার ছায়া—যতদিন না দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সমাধান হবে, ততদিন এই দস্যুতার ভূত হয়তো থেকেই যাবে।







