জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-এর মহাপরিচালক ড. কু দোংইউ বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ শিল্প এবং কৃষিজাত পণ্য, বিশেষ করে ফল রপ্তানির উন্নয়নে অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
রোমে এফএও সদর দপ্তরে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম ও সংস্থার ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ আশ্বাস দেন তিনি। বৈঠকের শুরুতে ড. কু অধ্যাপক ইউনূসকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং বাংলাদেশের কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নে তার অবদানের প্রশংসা করেন।
এফএও মহাপরিচালক বাংলাদেশকে ‘উচ্চ সাফল্য অর্জনকারী দেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, সংস্থা প্রযুক্তিগত সহায়তা, উদ্ভাবন এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমুখী সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
অধ্যাপক ইউনূস এফএও’র দীর্ঘদিনের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনটি নতুন ক্ষেত্রে সহায়তা চান—
গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণে সক্ষমতা বৃদ্ধি,
ফল রপ্তানিতে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ উন্নয়ন,
ফসল সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা জোরদার করা, যার মধ্যে সাশ্রয়ী ও বহনযোগ্য কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন অন্তর্ভুক্ত।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমাদের পুরো সমুদ্র রয়েছে, কিন্তু আমরা মাছ ধরি অগভীর জলে। বিদেশি ট্রলার আমাদের জলসীমায় মাছ ধরছে, অথচ আমরা যথাযথভাবে প্রস্তুত নই।”
এর জবাবে ড. কু প্রধান উপদেষ্টাকে পরামর্শ দেন, বাংলাদেশ যেন চীনের বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানিয়ে গভীর সমুদ্রের মাছের মজুদ নিরূপণ ও টেকসই আহরণ কৌশল প্রণয়নে সহায়তা নেয়।
ফল রপ্তানির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, চীন ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তিনি ছোট কৃষকদের ফসল সংগ্রহোত্তর ক্ষতি কমাতে মোবাইল কোল্ড স্টোরেজ নকশার গুরুত্বেও গুরুত্ব দেন।
ড. কু বলেন, “উচ্চমূল্যের নগদ ফল উৎপাদন কৃষি খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮০-এর দশকে জাপানে ফল রপ্তানির মাধ্যমে চীন কৃষি উন্নয়নে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছিল।” উল্লেখ্য, ২০২৬ সালে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির ২০ বছর পূর্ণ করবেন, যা উদযাপন করা হবে।