শিরোনাম
সিরাজগঞ্জে ভারতীয় সূতা উদ্ধার করেছে পুলিশ   » «    “প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে অন্যান্য ক্যাডারের ৫০% অন্তর্ভুক্তির পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ”   » «    ‘ক্রিসমাস ডে’ কে কেন বড়দিন বলা হয়?   » «    সাজাভোগ শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরল ২৬ বাংলাদেশি পুরুষ ও নারী   » «    চাঁদপুরে জাহাজে খুনের ঘটনায় আটক ইরফান   » «   

কালাইয়ে পাকা সড়কে হাটু পানি, ভোগান্তিতে পথচারীসহ শিক্ষার্থীরা

এস এম আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই উপজেলা প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র গ্রামের তিন রাস্তার মোড় থেকে কামিল মাদ্রাসা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের ৭-৮ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা ও পানি নিষ্কাশনের নালার অবস্থা বড়ই নাজুক।
পাকা রাস্তার দুই পার্শ্বে বসতবাড়ীগুলো উচুঁভাবে নির্মাণ করার কারণে সামান্য বৃষ্টির পানিতেই রাস্তাটি তলিয়ে যায়। পাকা সড়কে জমপ থাকে একহাঁটু পানি। আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঢুকে পড়ে পানি। দীর্ঘদিন ধরে এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাতিয়র কামিল মাদ্রাসা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শতশত শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী ও গ্রামের পথচারীরা। তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদর চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এসব সমস্যা সমাধানের কাজ চলছ।
হাতিয়র কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, একটি কামিল মাদ্রাসা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের ৭-৮ টি গ্রামের লোকজনদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে। বসতবাড়ী থেকে রাস্তা নিচু হওয়ায় কি বর্ষা আর কি শুকনো সব সময় এ রাস্তায় পানি জমে থাকে। তবে বর্ষার সময়ে পানি আরও বেশী জমে। কখনও কখনও হাঁটু পানিতেও যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের। এ সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাতিয়র কামিল মাদ্রাসা ও ১৯৭২ সালে হাতিয়র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়ে সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। এর পাশাপাশি হাতিয়র তিনমাথা মোড় গড়ে উঠেছে একটি বাজার। বাজারে রয়েছে স্থায়ী শতাধিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। রয়েছে বড় বড় রাইচ মিল ও ধান শুকানোর চাতাল। দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিদিন যাতায়াত করে দুই হাজারর অধিক শিক্ষার্থী। এছাড়াও বাজার যাতায়াত করে আশপাশের ৭-৮ টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তায় যাতায়াত করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের।
হাতিয়র বাজারের কয়েকটি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয়। তাঁরা বলেন, এখানকার মিল-চাতালের উৎপাদিত চাল এবং কৃষকদের উৎপাদিত ধান ও আলু প্রতিদিন ১০-১২টি পণ্যবাহী ট্রাক লোড করে জয়পুরহাটের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় নেয়া হয়। তবে সড়ক ও ড্রেনেজ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ভেতরেও পানি উঠে যায়। পানি জমে থাকায় অনেকাংশ পাকা সড়কের পিচের ঢালাই উঠে গেছে। গর্তে ও ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। বর্ষাকালে এ দুর্ভোগ চরম উঠে। এসব সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।
হাতিয়র বাজারের কাজী রাইচ মিলের স্বত্বাধিকারী কাজী আব্দুল মোমেন বলেন, এ সড়ক এখন চলাচলের একেবারে অনুপযোগী। হাঁটে চলাও কঠিন। কৃষি পণ্য নিতে আসা ট্রাক ও অটো চালকরা ভোগান্তিতে পড়েন। বাজারের ফার্মেসী মালিক জহুরুল ইসলাম বলেন, রাস্তা নির্মাণ হয়েছে অনেক আগে, আর দুই পাশপ বাড়ী নির্মাণ হয়েছে অনেক পড়ে। নকশা ছাড়া অপরিকল্পিতভাব রাস্তা থেকে বসতবাড়ীগুলো উচুঁতে নির্মাণ করার কারণে এ সমস্যার সষ্টি হয়েছে। তাই আজ এ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সকলকে।
হাতিয়র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাহিমা আক্তার বলেন, এ রাস্তায় প্রায় হাঁটু পানি জমে রয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জমানো পানি বেরও হয়না। ছোট ছোট শিশুরা এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে অনেক সময় তাদের পড়নের কাপড় ভিজে যায়। আবার বই-খাতা পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ রাস্তা দ্রুত সংস্কার  করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
স্থানীয় আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর বলেন, এ সমস্যা একদিনের নয়,যে চাইলেই সমাধান করা যাব। তবে এ বিষয়ে আগামী উপজেলা সম্বনয় সভায় আলাচনা করে সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগে ড্রেন তারপর রাস্তার ব্যবস্থা।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাত আরা তিথি বলেন, দুই পাশে উঁচু করে বসতবাড়ী নির্মাণ করায় রাস্তা নিচু হয়েছে। যে কারণে আশপাশ থেকে বৃষ্টির পানি এখানে এসে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। রাস্তার উনয়নসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * পথচারী * ভোগান্তি * শিক্ষার্থী * হাটু পানি
সাম্প্রতিক সংবাদ