সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘটলো বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে। দেবী দুর্গার মর্ত্যে আগমন শেষে বিদায়ের সুরে মুখরিত হলো দিনাজপুরের প্রতিটি মন্দির। পূজা, আরাধনা ও মহা বিজয়ার শুভাশীষ গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২৯ মিনিটে দেবী দুর্গাকে প্রতীকী রথে আরোহন করিয়ে কৈলাসে স্বামীর গৃহে প্রত্যাবর্তনের প্রথা সম্পন্ন হয়। এর ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরের ১ হাজার ২৫৯টি পূজামণ্ডপে সাড়ম্বরে পালিত হয় সিঁদুর খেলা।
সকালের পূজা-অর্চনার পর থেকেই বিবাহিত নারীরা শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার চরণে সিঁদুর নিবেদন করেন। এরপর শুরু হয় আনন্দঘন সিঁদুর খেলা। লাল সিঁদুরে রাঙিয়ে একে অপরের কপাল ও মুখে শুভেচ্ছার বার্তা ছড়িয়ে দেন নারীরা।
পূজামণ্ডপে আসা মাধবী চক্রবর্তী ও মনীষা রায় জানান, সিঁদুর খেলা কেবল উৎসবের আমেজই নয়, এটি বিবাহিত নারীদের জন্য এক বিশেষ আশীর্বাদ। তাদের বিশ্বাস, এই সিঁদুর স্বামীর দীর্ঘায়ু, পরিবারের সুখ-সমৃদ্ধি এবং আর্থিক উন্নতি বজায় রাখে। তাই পূজা শেষে তারা একে অপরকে সিঁদুর মেখে শুভকামনা জানান।
শহর থেকে গ্রামীণ মণ্ডপ—সবখানেই বিজয়া দশমীর দিনে ছিল নারীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি। লাল শাড়ি ও গহনার সাজে সজ্জিত নারীরা হাসি-আনন্দে ভরিয়ে তুলেন পূজামণ্ডপ প্রাঙ্গণ। দেবী বিদায় নিলেও সিঁদুর খেলার এই ঐতিহ্য বাঙালি হিন্দু সমাজে আবেগ, মিলন ও আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
দিনাজপুর রথ খোলা দুর্গা মণ্ডপের পুরোহিত সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “বিবাহিত নারীদের জন্য এই সিঁদুর খেলা সম্মান ও মঙ্গলদায়ক। দেবীর চরণের সিঁদুর তারা সংগ্রহ করে কৌটায় ভরে রাখেন এবং সারা বছর ব্যবহার করেন। এতে স্বামীর মঙ্গল, সুস্থতা ও পরিবারের কল্যাণ কামনা করা হয়। আগামী বছর পর্যন্ত তারা যেন সুস্থ সুন্দর থাকেন, সেটাই প্রত্যাশা।”
তিনি আরো বলেন, শেষ বিকেলে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয়। আর সিঁদুর খেলার উচ্ছ্বাসে নারীরা জাগিয়ে তোলেন আগামী বছরের জন্য নতুন আশার আলো।