শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
দশ টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুদের ডেকে নিয়ে গিয়ে নোংরামী করার অভিযোগ উঠেছে এক কাঁচামাল (সবজি) ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এমন ঘটনায় সাড়ে ৫ বছর বয়সী এক শিশুর পিতা মামলা দায়ের করেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর থানায়।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বার) দুপুরে রুজু করা ওই অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার মৃত জবান আলীর ছেলে মোখলেস (৪৫)। সে এলাকার সিপাইগঞ্জ বাজারের সবজি ব্যবসায়ী।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে এলাকার ৩ জন মেয়ে শিশুকে টাকা দেয়ার লোভ দেখিয়ে অদূরে জনশূন্য এলাকা ক্যানেলের পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের পড়নের প্যান্ট খুলে অশ্লীল কাজ করে। এতে দুই শিশু ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় এবং লজ্জায় কাউকে কিছু বলেনি।
কিন্তু সাড়ে ৫ বছর বয়সের ছোট শিশুটি বাড়ি এসে তার মাকে বলে দেয় যে, সবজিওয়ালা মোখলেস দাদা তাকে ১০ টাকা দিয়েছে এবং ক্যানেলের পাড়ে নিয়ে গিয়ে প্যান্ট খুলে হাতাহাতি করেছে। মেয়েটির মা ও নানী তাৎক্ষণিক মোখলেসের বাড়ি যায়।
কিন্তু সে ছিলোনা। তার স্ত্রী বিষয়টি বাড়াবাড়ি না করার জন্য বলে থামায়। পরে সিপাইগঞ্জ বাজারে গিয়ে মোখলেসকে পেয়ে গালমন্দ করে। এসময় ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়ে এবং রাতেই বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। তবে অপকর্ম ধামাচাপা দিতে দালাল চক্র অপচেষ্টা চালায়।
কিন্তু শিশুটির বাবা এহেন অপরাধীর শাস্তি হওয়া উচিত নয়তো আরও শিশুর সাথে সে এই অপকর্ম করবে ভেবে বিকেলে সৈয়দপুর থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। তিনি অপরাধীর উপযুক্ত বিচার দাবী করেছেন।
খবর পেয়ে সকালে সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী বলেন, মোখলেস ইতোপূর্বেও এধরণের অন্যায় করেছে। এনিয়ে বাজারে একাধিকবার শালিসি হয়েছে। তবুও তার পরিবর্তন হয়নি। এখনো এলাকার মহিলারা বাঁশঝাড়ে বা ক্ষেতে প্রাকৃতিক কাজ সারতে গেলে মোখলেস আড়ালে আবডালে বসে ডিস্টার্ব করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোখলেসের বাড়ি ও বাজারের দোকানে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ছোট ভাই জুলফিকার বলেন, মোখলেস সৈয়দপুর সবজি আড়তে গেছে দোকানের মাল কেনার জন্য। আর তার স্ত্রী গেছেন উত্তরা ইপিজেডের কর্মস্থলে। বাড়িতে আর কেউ নাই।
মোখলেস বা তার স্ত্রীর মোবাইল নম্বর চাইলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন জুলফিকার। তিনি বলেন, আসলে মাঝে মধ্যে এধরণের ঝামেলা হয়। তবে এবারের ঘটনা সত্য নয়।
এই কথায় সায় দিয়ে মোখলেসের জামাতা মিন্টু মিয়া বলেন, শুধু অভিযোগ করলেই হবে? সাক্ষী প্রমাণ দিতে হবে। কেউ কি দেখেছে? বাচ্চারা বললেই কি হবে? আসলে কেউ ভালো খাইলে, ভালোভাবে চললে অনেকের হিংসা হয়। তেমন লোকজনই বিষয়টা নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। শ্লীলতাহানির কিছুই ঘটেনি। হয়তো দাদা হিসেবে বাচ্চাদের সাথে দুষ্টামি করেছে মাত্র। জঘন্য কোন কাজ করেনি।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আ. ওয়াদুদ অভিযোগ পাওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত করে দেখছি। সত্যতা পাওয়া গেলে আসামিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এমন জঘন্য অপরাধীর কোন ছাড় নেই।