জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা ও কৃষক ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। আলুর দাম কমে যাওয়ায় এবং হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির ফলে কৃষকেরা বর্তমানে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে৷ কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর জয়পুরহাট জেলার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে৷ তবে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না।
এবারের আলু উৎপাদনে কৃষকের খরচ বাড়লেও, দাম কমে যাওয়ায় তারা অস্বাভাবিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে৷ বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করার পর আলু বিক্রি ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না৷ মাত্র ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকায়, যার ফলে কৃষকেরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ঋণ করে আলু উৎপাদন করলেও লাভের পরিবর্তে কৃষকরা ব্যাপকভাবে লোকসানের মুখে পড়ছেন। কৃষকরা বলছেন, “এমনিতে কৃষকদের অবস্থা খারাপ, তার উপরে হঠাৎ করে আলুর দাম কমে যাওয়ায় মরার উপরে খাড়ার মতো অবস্থা হয়েছে।”
আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়েও কৃষকরা ক্ষুব্ধ। হিমাগার কর্তৃপক্ষ পূর্বে নির্ধারিত ভাড়ার তুলনায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। হিমাগার ভাড়া বস্তাপ্রতি ৩০০ থেকে বেড়ে থেকে ৪০০ কেউ কেউ ৪৫০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছে, যেখানে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৩২০ টাকায়। কৃষকরা অভিযোগ করছেন,এখন দাম কম হিমাগারে সংরক্ষণ করে পরে দাম বৃদ্ধি পেলে বিক্রি করবো কিন্তু “হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধি হওয়ায় আমাদের লোকসান আরও বেড়ে যাচ্ছে।”
কৃষকদের দুরবস্থার প্রতিবাদে ছাত্র জনতা মাঠে নেমে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, “সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে আমরা কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাবো।” তারা কৃষকদের সঙ্গে একযোগে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এবং প্রশাসনের কাছে সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার ও হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবিতে সারকলিপি প্রদান করেছে। কৃষকরা বলছেন, “আমরা সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার চাই, না হলে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কঠোর আন্দোলনে নামব।”
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান জানিয়েছেন, “উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি নজরদারি করছে এবং জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় কমিশনার এমনকি মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করা হয়েছে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।”
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, “কৃষকদের বাঁচাতে হলে এই সিন্ডিকেট ভাঙতেই হবে। তাদের সমস্যা সমাধান না হলে কৃষি ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে।”
এ পরিস্থিতিতে কৃষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে দ্রুত প্রশাসনের সহায়তা এবং সিন্ডিকেট মুক্ত ব্যবস্থা দাবি করছেন৷