মোঃশফিকুল ইসলাম ,স্টাফ রিপোর্টার:
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত পান্না সিকদারের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সহপাঠী ও এলাকাবাসী।
রবিবার (২৪ আগষ্ট) দুপুরে ওই ছাত্রীর বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়েছে। এতে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, সহকারী প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান ও কয়েকজন শিক্ষার্থী।
মানববন্ধনে অভিযুক্ত পান্না শিকদারের ফাঁসির দাবি জানান তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত যুবকের বিচার না করলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, এই এলাকার প্রতিপ শিকদারের ছেলে পান্না শিকদারের কারণে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। ওই বখাটের কাজই ছিল মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা। এখনও বিদ্যালয়ের সামনে তার মতো অনেক বখাটের উৎপাত দেখা যায়। এসব বখাটে গ্রেফতার করতে হবে। সেই সঙ্গে পান্না শিকদারের সহযোগীদেরও গ্রেফতার করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পান্না শিকদার কে ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে।
উল্লেখ্য গত মঙ্গল বার(১৯ আগষ্ট) দুপুরের দিকে উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে।
মৃত্যুর আগে সে দেড় পৃষ্ঠার একটি হৃদয়বিদারক চিরকুট লিখে গেছে, যেখানে পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজের ব্যর্থতার বর্ণনা দেওয়া হয়। নিহত নাসরিন রঘুনাথপুর গ্রামের দীনমজুর এসকেন্দার মিয়া মেয়ে এবং হক মাধ্যমিক শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিল। মানববন্ধনে তার সহপাঠীরা জানান মারা যাওয়ার কারন হচ্ছে সে খাতায় লিখে গেছে আমরা পড়ছি, একটা ছেলের সাথে তার দীর্ঘদিন রিলেশন ছিল। সেই ছেলে বিয়ার প্রত্যাশা দিয়া তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করছিল। ঐ পান্না শিকদার বিবাহ করতে রাজি না হওয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। যে ছেলেটির সাথে সম্পর্ক করতো সে ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা, তার নাম পান্না শিকদার তার পিতার নাম লতিফ সিকদার। আপনারা এমন একটি প্রতিবেদন করবেন যাতে সুষ্ঠ বিচার হয় আমরা এর শুষ্ঠ বিচার চাই।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আরো জানান, ওই ছেলেটি ওকে ডিস্টার্ব করার কারণে অনেক দিন স্কুলে আসেনি নাসরিন। অনেক খারাপ খারাপ কথা বলেছে ঐ ছেলেটা। ওকে বিবাহ করবে না বলায় ও এই আত্মহত্যা করেছে।আমরা ওকে গ্রেফতার করে ওর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
নাসরিনের চিরকুটে লেখা ছিল, আমি মরার কারণ হলো জলিল শিকদারের একমাত্র ছেলে পান্না শিকদার সে আমাকে বিয়ের কথা বলে আমার দেহ ভোগ করেছে। আমার শেষ ইচ্ছা ও এমন সাজা হোক যাতে আমার মত আর কারো জীবন না নষ্ট করতে পারে। বাবা এবং ভাই ও বোনেরা পারলামনা তোমাদের কথা রাখতে।আমাকে মাফ করে দিও। আমি বিয়ে করলেও কোনদিন সুখী হতাম না। আমি তো এমনিতে জাহান্নামী। আর মা আমি তো কি হইছে। আরও তো ভাই বোন আছে। আমাকে বিয়া দিবানা মনে করবা আমি শশুর বাড়ি। কান্না করবা না একটুও। আমার বুকে না অনেক কষ্ট। তাই আর সহ্য করতে পারলাম না। পান্নার জন্য কিনা করছি কিন্তু ও মিথ্যা অপবাদ দিলো।আমি না সারা বেড়ার সাথে কথা কই। তাই হলে ওর কাছে বারবার যেতাম না। বিদায় সবাই ভালো থাকো।ওর জন্য আমার অনেক কথা শুনতে হইছে। আমি ওর উচিত শিক্ষা চাই।
good bye।