জুয়েল রানা, মধুপুর প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট জোবাইর-আল-মাহমুদ (রিজভী আহমেদ) বৃহস্পতিবার মধুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সামাদের রাজনৈতিক ও সংগ্রামী জীবনের বিস্তৃত ইতিহাস তুলে ধরেন। একই সঙ্গে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজের প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গেও বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সন্তান এবং চব্বিশের আন্দোলনের শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরু ও মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা অ্যাডভোকেট জোবাইর-আল-মাহমুদ রিজভী আহমেদ জানান, তাঁর বাবা ১৯৪৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার আউশনারা ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর দাদা মরহুম জবান আলী সরকার ছিলেন ভূস্বামী, সমাজ সংস্কারক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ১৯৬২ সালে কুখ্যাত হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসেন আব্দুস সামাদ। পরবর্তীতে ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেন এবং তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের আদেশে ১১ দিনের কারাদণ্ড ও বেত্রাঘাতের শিকার হন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ১১ নম্বর সেক্টরের কাদেরিয়া বাহিনীতে গেরিলা যোদ্ধা ও কোম্পানি কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে বাহিনীর প্রধান বেসামরিক উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধের সময় তাঁর বড় ভাই ইমান আলী সরকার শহীদ হন এবং পাকিস্তানি সেনারা তাঁদের পৈতৃক বাড়ি দু’বার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। স্বাধীনতার পর সংগ্রাম স্বাধীনতার পর দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করলেও শাসকগোষ্ঠীর বিরোধিতায় রক্ষীবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হন আব্দুস সামাদ। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে ডাকসুর জিএস পদে জয় লাভ করেন। একই বছরে তাঁর রাজনৈতিক প্রভাবে মধুপুর আসনে জাসদ প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, ফলে আওয়ামী লীগ আসন হারায়। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন কারাগারে বন্দী ছিলেন। এরপর ১৯৭৯, ১৯৮১ (উপনির্বাচন), ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাসদ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি দীর্ঘদিন মধুপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে মধুপুর-ধনবাড়ি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মনোনয়ন বিষয়ে রিজভীর অবস্থান সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট রিজভী আহমেদ বলেন আমি সেই পথের যাত্রী, যে পথ নেতৃত্বে বিশ্বাস করে, আদর্শে বিশ্বাস করে এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চায়। আমি বিএনপির একজন কর্মী, একজন প্রার্থী ও একজন পথযাত্রী। দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তার সাথেই থাকবো—ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন আমার এলাকা থেকে কে প্রার্থী হবেন, তা নির্ধারণ করবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ। ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বলছি—দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমি তার পক্ষেই আছি এবং থাকবো।
সকল নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর উদ্দেশে তিনি ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেন,
> “বিভাজন নয়, শক্তিশালী একটি অবস্থান তৈরি করতে হবে যেন গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন
মোঃ মোষাঈন বুলবুল মাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক পৌর ছাত্রদল, ধনবাড়ী।
মোঃ আব্দুল হামিদ সদস্য, যদুনাথপুর ইউনিয়ন বি.এন.পি ধনবাড়ী।
ভ্যাডভোকেট সোহানুর রহমান এ. পি.পি, টাংগাইল জজফোর্ট।
মশিউর রহমান রোজেন যুগ্ম-আহ্বায়ক
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রদল।
এমএম. সাঈফ আইফফ সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক
-যাশ বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রদল
তা মৃদুল খন্দকার যুগ্ম আহবায়ক শে সাবেক সদস্য সচিব,
পৌর ছাত্রদল মধুপুর।
আলমগীর হোসেন আলম “সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক পৌর যুবদল, মধুপুর।
শেষে এডভোকেট সকল মিডিয়া কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে দেয়।