মো. খায়রুল ইসলাম , গৌরনদী প্রতিনিধি:
বরিশালের গৌরনদীতে টেস্ট বাণিজ্য, দুর্নীতি ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামানের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন স্থানীয় জনতা। ঘটনায় চাপে পড়ে ডা. মনিরুজ্জামানকে বদলি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টায় গৌরনদী উপজেলা হাসপাতাল রোডে সর্বস্তরের জনতার ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। পরে দেড় ঘণ্টা ধরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের আশোকাঠী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা, ফলে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
প্রশাসনের আশ্বাসে প্রত্যাহার, এর আগেই বদলি
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আরা মৌরি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাজিব হোসেন ও পুলিশ সদস্যরা। শুরুতে আন্দোলনকারীদের সরাতে ব্যর্থ হলেও পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করেন বিক্ষোভকারীরা।
স্থানীয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা ছাড়াই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ডা. মনিরুজ্জামানকে দ্রুত বদলি করা হয়েছে, যা আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতিক্রিয়ায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
“কমিশনের টেস্ট বাণিজ্য, বারবার অভিযোগেও ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ”
বিক্ষোভকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ডা. মনিরুজ্জামান হাসপাতাল থেকে টেস্ট কমিশনের নামে বাণিজ্য করে আসছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রুবেল গোমস্তা, ছাত্রনেতা সাব্বির হোসেন, মোর্শেদ হাসান ও সানাউল হোসেন মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন। রুবেল গোমস্তা বলেন,
“দুর্নীতিবাজ এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বহুবার অভিযোগ দিয়েও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। জনগণের দাবিতেই আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হই।”
“দালালদের উসকানিতেই অবরোধ”
ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক আন্দোলনকারী অভিযোগ করেন, মানববন্ধনের সময় স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত দালালরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বারবার মিছিল করে উসকানিমূলক আচরণ করেন। এর পরপরই বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কে অবস্থান নেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আরা মৌরি বলেন,
“আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করি। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা চেয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ইতিবাচক।”