নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আবারও আলোচনায় এসেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল এই ব্যবস্থার পক্ষে একমত হয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে এখনো মতভেদ রয়ে গেছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। প্রথম প্রস্তাব অনুযায়ী, সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের সদস্যদের ভোটে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত হবেন। দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সর্বদলীয় একটি কমিটির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত হবেন।
কমিশনের প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত নাম নিয়ে ‘র্যাঙ্ক চয়েজ’ ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত নির্বাচন করার সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে অচলাবস্থা সৃষ্টি না হয়।
বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রস্তাব দেয়নি। তবে দলটি আগের বিতর্কের কারণে বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে দূরে রাখার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। জামায়াত পুরনো কাঠামোর পক্ষে থাকলেও নতুন প্রস্তাবনা দেবে বলে জানিয়েছে। এনসিপি উচ্চকক্ষ ও সর্বদলীয় কমিটির যৌথ সিদ্ধান্তে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের কথা বলেছে।
২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে হাইকোর্ট এক রায়ে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উচ্চকক্ষ গঠনের পদ্ধতি নিয়েও মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ চাইছে প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী, আবার কেউ চাইছে সংসদীয় আসন অনুপাতে আসন বণ্টন।
আগামী সপ্তাহে জাতীয় সংলাপে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলে দীর্ঘদিন পর ফের সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পথ সুগম হতে পারে।